বিএনপিকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলার জন্য দলীয় চেয়ারপারসন ও নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা দেয়া হয়েছে এমন অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আজকে দেশের বিচারব্যবস্থা নির্দিষ্ট একটি দলের হাতের মুঠোয় চলে গেছে। সরকার যা চায়, বিচারও তাই হয়।বুধবার ঢাকা জজ কোর্টে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে মামলা দেয়া হয়েছে, সেটা টেকেই না। এই মামলার যেদিন চার্জ গঠন করার সময় ছিল, সেদিনই সেটা নিষ্পত্তি করা যেত। কিন্তু সেটাতে সরকার অবৈধভাবে বাধা দিয়েছে। এভাবে সরকারের ইচ্ছামতো ফরমায়েশি রায় ইতিহাসে নেই। এর ফলে গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে খালেদা জিয়া অন্যায়ভাবে কারাবরণ করছেন।ফখরুল বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা বলছেন- তার উন্নত চিকিৎসা দরকার।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের লজ্জা হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা যখন এ কথাগুলো বলছি- সরকার এসব নাকচ করে দিয়েছে। সরকারে একজন তথ্যমন্ত্রী আছেন। তিনি বলেছেন- আমরা নাকি বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে রাজনীতি করছি। উনার লজ্জা হওয়া উচিত। আমি আবারও বলছি, বেগম জিয়া সম্পর্কে কখনো বেশি কথা বলবেন না। দেশের মানুষ এটা ভালোভাবে নেবে না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সবকিছু মুছে ফেলার জন্য আওয়ামী লীগ ইতিহাসকে বারবার বিকৃত করেছে। ১৯৭১ সালের কালরাত্রিতে গোটা জাতি যখন অপেক্ষা করছিল যে, একটা রাজনৈতিক দল থেকে কোনো ঘোষণা আসবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের কথা সে নির্দেশ তারা পায়নি। ওই সময় আমাদের মূল নেতা যিনি ছিলেন, তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। অন্য অনেক রাজনৈতিক নেতারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। সেই সময় অখ্যাত এক মেজর সামনে এসে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছেন। যেটা সবারই জানা।’
ফখরুল বলেন, ‘আজকে বেগম জিয়ার চিকিৎসা পাওয়ার যে অধিকার, সেটা থেকে সরকার তাকে বঞ্চিত করেছে। ৩৫ লাখ মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। এসব মামলা দেয়ার একমাত্র উদ্দেশ্যই হচ্ছে বিএনপিকে একেবারে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা। ম্যাডাম যে মামলায় কারাবরণ করছেন, সেই মামলায় সরকারের অনেক মন্ত্রী জামিনে আছেন। কিন্তু ম্যাডামকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। কারণ তারা জানে ম্যাডাম যদি বাইরে থাকেন, তাদের রাজনীতি আর টিকবে না।
ঢাকা বার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তৃতা করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান প্রমুখ।