মোস্তাক আহমেদ, সরিষাবাড়ী, জামালপুর
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী ও সহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে গ্রাহক হয়রানিসহ নগদ টাকা ও স্বর্নালংকার হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে ভুক্তভোগী এক নারী। অভিযোগটি সত্য নয় বলে জানিয়েছেন নির্বাহী কর্মকর্তা।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড পিডিবি’র আওতায় সরিষাবাড়ী বিক্রয় ও বিতরন বিভাগের গ্রাহকরা সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়ে আসছেন। তাদের বিরুদ্ধে গ্রাহক লাঞ্চিত করাসহ নগদ টাকা ও স্বর্নালংকার হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে গত বুধবার রাতে পিডিবি’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এক মহিলা গ্রাহক থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। শুধু তা-ই নয় নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর তালুকদার ও সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে সাইফুল ইসলামের যোগদানের পর গ্রাহক হয়রানি আরো বেড়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া গ্রাহকদের পোস্ট পেইড মিটারকে প্রিপেইড মিটার করে দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে বলেও অনেকে দাবি করেন। গ্রাহকের অজান্তে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে সচল মিটার খুলেও হয়রানি করা হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কতিপয় গ্রাহক বলেন, পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশে ঠুনকো অজুহাতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। অথচ মিটার বাইপাসকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত কোন ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্টরা। থানায় দায়ের করা অভিযোগে জানা যায়, পৌরসভার শিমলাবাজার এলাকার নিজ বাসায় বাস করেন মাহফুজা আক্তার (২৫)। তার স্বামী প্রবাসে থাকেন। তিনি ওই বাসায় তার শিশু সন্তানকে নিয়ে বাস করেন। একই বাসায় তার একাধিক ভাড়াটিয়াও রয়েছে। এ বাসায় তাদের ৩টি বৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। ৩টি মিটারই প্রিপেইড মিটার। তার বাসার একটি প্রিপেইড মিটারে টাকা তুলতে পিডিবি’র অফিসে গিয়ে জানতে পারেন তার মিটারকে পোস্ট পেইড করে দেওয়া হয়েছে। পরে তিনি বিষয়টি সংশোধনের জন্য নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে আবেদন করেন। পরে পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী ওই আবেদনের রিসিভ কপিটি ফেরৎ চান। তা না পেয়ে গত বুধবার রাতে সরিষাবাড়ী পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর তালুকদারের নির্দেশে সহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম লোকজন নিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দিয়ে ওই নারীর বাসায় তল্লাশী চালান। এতে ওই বাসার জিনিসপত্র তছনছ হয়ে যায়। এসময় ওই নারীর কাপড় ধরেও টানাটানি করেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এসব দেখে মাহফুজা আক্তার ডাক-চিৎকার শুরু করেন। তার ডাক-চিৎকারে আশ-পাশের লোকজন ছুটে আসেন। পরে তারা কৌশলে চলে যান। পরে মাহফুজা আক্তার তার কক্ষে খোঁজ নিয়ে দেখতে পান তার শো-কেচের ড্রয়ারে রাখা নগদ ৮০ হাজার টাকা ও ৩ ভরি ওজনের স্বর্নালঙ্কার উধাও হয়ে গেছে। এ বিষয়ে গত বুধবার রাতেই নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর তালুকদার ও সহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৮/১০ জনের বিরুদ্ধে সরিষাবাড়ী থানায় লিখিত অভিযোগ করেন মাহফুজা আক্তার। এ ব্যাপারে পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর তালুকদার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই বাসা থেকে একটি মিটার কৌশলে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। সে মিটারের হদিছ জানতে চাওয়া হলে নানা অপকৌশল আটেন মাহফুজা আক্তার। এ কারনে তার একটি মিটার লক করে দেওয়া হয়। তবে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়নি। মিটার লক করে দেওয়ায় আক্রোশ বশত সে থানায় একটি মিথ্যা অভিযোগ করেছে। এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহব্বত কবীর বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।