মো. মিঠু মিয়া, সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জের হাওরের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসনের দেয়া নির্দেশনা মানছেনা অধিকাংশ উপজেলা। জেলা প্রশাসনের দেয়া নির্দেশনা মোতাবেক পিআইসি গঠনের পর প্রত্যেক প্রকল্পের পিআইসিদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার কথা। নিজ নিজ ওয়েবসাইটের পাশাপাশি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সমন্বয়ে তাদের ওয়েবসাইটে সবগুলো উপজেলার পিআইসি তালিকা প্রকাশের নির্দেশ থাকলেও অধিকাংশ উপজেলা এই নির্দেশনা উপেক্ষা করে কাজ করছে। অন্যান্য বছর সকল পিআইসি তালিকা ওয়েবসাইটে পাওয়া গেলেও এবছর এখনো প্রকাশ হয় নি। এটা অনুচিত কাজ বলে মন্তব্য করেছেন ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও মনিটরিংয়ের জন্য গঠিত কমিটির সদস্য ও জেলার সচেতন নাগরিকরা।জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়েবসাইট খোঁজে দেখা যায়। ২৫ জানুয়ারি বুধবার পর্যন্ত মাত্র ৬ টি উপজেলায় পিআইসির আংশিক তালিকা প্রকাশিত আছে। বাকি ৬ টি উপজেলায় কোনো তালিকা প্রকাশ করা হয় নি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়েবসাইটে শুধুমাত্র শান্তিগঞ্জ উপজেলার আংশিক তালিকা পাওয়া গেছে। এছাড়া বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, শাল্লা, দিরাই উপজেলা প্রশাসনের নিজস্ব ওয়েবসাইটে নিজ নিজ উপজেলার আংশিক তালিকা প্রকাশ হয়েছে।
ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও মনিটরিংয়ের জন্য গঠিত জেলা কমিটির সদস্য বিন্দু তালুকদার বললেন, কাজের স্বচ্ছতার জন্য প্রথম বছর থেকেই ওয়েবসাইটে তথ্য সহ তালিকা প্রকাশ করার নির্দেশনা দেয় জেলা প্রশাসন। বিগত বছর ধরে এমন আদেশ কার্যকর ছিলো। ওয়েবসাইটে ঢুকলে প্রত্যেক উপজেলার পিআইসির নাম ঠিকানা হ সকল তথ্য পাওয়া যেতো। এবছর অনেকেই এই নিয়ম মানছেন না।টিআইবিথর সচেতন নাগরিক কমিটির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট খলিল রহমান বললেন, স্বচ্ছতা নিশ্চিত ও তথ্য প্রাপ্তির জন্য জেলা প্রশাসন থেকে এমন একটি নির্দেশনা দেয়া আছে। এই নির্দেশনা ২০১৭ সালের পর থেকে কার্যকর আছে। এবছর ওয়েবসাইটে তথ্য প্রকাশিত না হওয়া অনুচিত কাজ। এতে স্বচ্ছতার দিক থেকে প্রশ্ন থেকে যায়। এটি কখনোই করা উচিৎ নয়। ছাতকের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.নুরের জামান চৌধুরী ওয়েবসাইটে তথ্য আপলোড না করার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তালিকা প্রকাশ করে স্বচ্ছতা ঠিক রাখা অবশ্যই জরুরী। কিন্তু আমাদের ওয়েবসাইটগুলো নিয়ন্ত্রণ করে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের একজন এসি¯ট্যান্ট প্রোগ্রামার (এপি)। আমার উপজেলায় এপি নাই, অতিরিক্ত দায়িত্বে আছেন তাহিরপুরের এপি। তিনি তাহিরপুরে অফিস করেন। এপি সাহেব ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করেন না। শুধু আমার না অধিকাংশ উপজেলায় এপিদের একই অবস্থা। তবে আমার উপজেলায় স্বচ্ছতার সাথেই হাওরের বাঁধের কাজ হচ্ছে। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের অসহযোগীতার জন্য ওয়েবসাইটে তালিকা দেয়া হয় নি। উপজেলা থেকে তালিকা পাঠালে আমরা সাথে সাথে ওয়েবসাইটে দিয়ে দেই। এবছর এখনো তালিকা আসে নি। তবে দ্রæত আপলোড দেয়ার চেষ্টা করবো।