অনলাইন ডেস্ক:
শেন ওয়ার্ন মুছে গেছেন ঠিকই তবে তার রেখে যাওয়া কীর্তিগুলো তো আর মোছা যাবে না। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে এমন কিছু করে গেছেন যা তাকে ততদিন মনে করাবে, যতদিন ক্রিকেট থাকবে। তেমনই একটা কীর্তি ‘বল অব দ্য সেঞ্চুরি’।৪ জুন ১৯৯৩, অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি লেগ-স্পিনার ইংল্যান্ডের মাইক গ্যাটিংকে এমন একটা ডেলিভারিতে বোল্ড করেছেন যা এখন পর্যন্ত আইকনিক হয়ে আছে। তার সে ডেলিভারি এখন পর্যন্ত অবিশ্বাস্য একটা ডেলিভারি যা এখনও ধাঁধাঁয় ফেলে দেয় ক্রিকেট বিশ্বকে।
১৯৯৩ সালে অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডের মাইক গ্যাটিংকে বল অফ দ্য সেঞ্চুরি করার ২৯ বছর পূর্ণ হয়ে গেল। অথচ শেন ওয়ার্ন বিদায় বলে দিয়েছেন পৃথিবীকে। চলতি বছরের ৪ মার্চ থাইল্যান্ডের একটি দ্বীপে মৃত্যু হয় তার।২৪ বছর বয়সী শেন ওয়ার্নের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখার পর অ্যাশেজ সিরিজে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে প্রথম বলেই উইকেট তুলে নেন। ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে মাইক গ্যাটিংকে করা ওই ডেলিভারিটা অস্ট্রেলিয়ানদের মতে ‘অপ্রত্যাশিত’।
গ্যাটিংকে করা প্রথম যে বলটি করেছিলেন সেটি লেগ স্টাম্পের অনেক আউট সাইডে ছিল, যা পরে অফ স্টাম্পে আঘাত করে। বল এত বেশি বাঁক নিয়ে গ্যাটিংকে বোল্ড করে যা এক কথায় অবিশ্বাস্য ছিল। বিভ্রান্তিতে পড়ে যাওয়া গ্যাটিং বেশ কিছুক্ষণ নীরবে তাকিয়ে থাকেন পিচের দিকে।ওই ম্যাচে শুধু গ্যাটিংকে নয়, সাজঘরে ফিরিয়েছিলেন গ্রাহাম গুচ, রবিন স্মিথ, অ্যান্ডি ক্যাডিককে। সেদিন তার বল মুগ্ধ করেছিল তৎকালীন ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইক আথারটনকে।
অথচ ১৯৯২ সালে অভিষেক ম্যাচে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকে শেন ওয়ার্ন ১ উইকেট নেন ১৫০ রান দিয়ে। ১৯৯৩ অ্যাশেজের প্রথম টেস্টের আগে ওয়ার্ন ১১টি টেস্টে ৩০.৮০ গড়ে নেন ৩১ উইকেট। বলা যায় অভিষেকের এক বছর পর নিজেকে খুঁজে পান ওয়ার্ন। যা তাকে শেষ পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছে অনন্য উচ্চতায়। ২০০৭ সালে যখন ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছেন তখন তিনি ১৪৫ টেস্ট খেলে ২৫.৪১ গড়ে ৭০৮ উইকেট নিয়ে শেষ করেন।আইসিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ওয়ার্ন বলেছিলেন, ‘বল অব দ্য সেঞ্চুরি’ খ্যাত ডেলিভারিটি তার জীবন বদলে দিয়েছিল মাঠ এবং মাঠের বাইরে।
‘একজন লেগ-স্পিনার হিসেবে আপনি চাইবেন, সব সময় প্রতিটি বল নিখুঁত লেগ-ব্রেক করাতে। আমিও সেটাই চেষ্টা করতাম, করেছিও। তবে ওই বলটা সত্যিই অবিশ্বাস্য ছিল। বল অব দ্য সেঞ্চুরি খ্যাতি পাওয়া ডেলিভারিটা সত্যিই আমার পুরো জীবন বদলে দিয়েছে মাঠে এবং মাঠের বাইরে। এটি এমন একটি ডেলিভারি ছিল যা সব লেগ-স্পিনাররাই ওরকম বল করতে চায়। এর জন্য আমি গর্বিত, যা আমি করেছি, বিশেষ করে মাইক গ্যাটিং-এর মতো একজনকে, যিনি একজন অসাধারণ খেলোয়াড় ছিলেন।’