সিলেট ব্যুরো
স্বপ্নে দেখছিলেন ঘরে অনেক মাছ ঢুকেছে। বটি-দা দিয়ে মাছগুলোকে কুপিয়ে টুকরো টুকরো করেন হিফজুর। এরপর ঘুম ভেঙে দেখতে পান মাছ নয়, আসলে নিজের স্ত্রী ও দুই সন্তানকে কুপিয়েছেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) দুপুরে সিলেটের গোয়াইনঘাট আমলগ্রহণকারী আদালতের বিচারক আলমগীর হোসেনের কাছে এমন জবানবন্দিই দিয়েছেন গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা হিফজুর রহমান। জবানবন্দিতে হিফজুর জানান, ১৫ জুন (মঙ্গলবার) রাতে ঘুমানোর পর স্বপ্নে দেখেন ঘরের ভেতর অনেক মাছ ঢুকেছে। পরে তিনি স্বপ্নের মধ্যে সেই মাছ কেটে টুকরো টুকরো করেন। ঘুম ভাঙার পর তিনি বুঝতে পারেন স্বপ্ন দেখে মাছ নয়, স্ত্রী ও দুই সন্তানকে দা দিয়ে কেটে খুন করে ফেলেছেন। আঘাত করেছেন নিজের শরীরেও। আদালতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার দায় স্বীকারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোয়াইনঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দিলীপ কান্তি নাথ। জবানবন্দি রেকর্ডের পর আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। বুধবার (১৬ জুন) হিফজুরের ঘর থেকেই স্ত্রী আলেমা বেগম, ১০ বছরের ছেলে মিজানুর রহমান ও ৩ বছরের মেয়ে আনিশার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতদের গলায় ও শরীরে বটি-দায়ের কোপের চিহ্ন ছিল। একইদিন সকালে আহত অবস্থায় হিফজুরকেও উদ্ধার করে পুলিশ। তার শরীরেও ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। সে সময় হিফজুরকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হলেও শুরু থেকে তাকে সন্দেহ করে পুলিশ। এই ঘটনায় আলেমার বাবা আইয়ুব আলী অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেন। তবে হত্যাকাÐের আলামত ও হিফজুরের উল্টাপাল্টা বক্তব্যের জন্য তাকে নজরদারিতে রাখে পুলিশ। ১৯ জুন (শনিবার) সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হিফজুরকে হত্যা মামলায় গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন তাকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করলে গোয়াইনঘাটের আমলি আদালতের বিচারক অঞ্জন কান্তি দাস পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। শুক্রবার রিমান্ড শেষের একদিন আগে হিফজুর এই স্বীকারোক্তি দেন।