শাহ্ মুহাম্মদ সুমন রশিদ,আমতলী, বরগুনা
আমতলী উপজেলা ও তালতলী রাখাইন পল্লীর নিজস্ব তাঁত শিল্প আজ হাড়য়ে যেতে বসেছে। উপজেলার সমুদ্র উপকূলীয়তে রাখাইন উপজাতি পাড়া রয়েছে ১৩টি । অংকুজানপাড়া, আগাঠাকুরপাড়া, মমেশেপাড়া, মনুখেংপাড়া, তালতলীপাড়া, ছাতনপাড়া, গোড়াঠাকুরপাড়া, তালুকদারপাড়া, সওদাগরপাড়া, কবিরাজপাড়া, লাউপাড়া, নামিশেপাড়া ও তাতীপাড়া। টোংঘর তৈরি করে এ সকল পাড়াগুলোতে রাখাইনরা দলগত ভাবে বসবাস করে আসছে। রাখাইনদের প্রধান পেশা ছিল কৃষি। এক সময় তারা নিজেরা নিজেদের পোষাক তাঁতে তৈরী করে তা ব্যবহার করত। এ সুবাধে প্রত্যকটি পাড়ায় একাধিক তাঁত গড়ে উঠে। প্রচলিত ছিল মেয়েরা তাঁতের পোশাক তৈরি করতে না পারলে তাদের বিয়ে দিতে সমস্যা হত। এ কারনে মেয়েরা তাঁতে কাপড় চোপড় বুনন কাজে পারদর্শী। প্রত্যেক উপজাতীর ঘরেই তাঁত ছিল। কালের বিবর্তনে এবং রাখাইন পরিবার সংখ্যা ক্রমশেই কমে যাওয়াতে তাঁতের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। আগাঠাকুরপাড়া, মমেশেপাড়া, গোড়াঠাকুরপাড়া, তালুকদার পাড়া, ছাতনপাড়া ঘুরে দেখা যায় প্রত্যেক পাড়ায় ২/১ টি তাঁতে কাজ হচ্ছে। ইতিমধ্যে সরকার পাড়া ভিত্তিক তাঁত শিল্প গড়ে তোলার জন্য আগাঠাকুরপাড়ায় ২০ জন মহিলাদের আধি থেকে আধুনিক তাঁত শিল্প গড়ে তোলার প্রশিক্ষন দিচ্ছে। কিন্তু তা অপ্রত্যুল। এছাড়া কবিরাজপাড়ায় বেসরকারী সংস্থা সংগ্রাম এ তাঁত শিল্পকে আধুনিকায়নের জন্য রাখাইন মহিলাদের প্রশিক্ষন দিচ্ছেন। আগাঠাকুরপাড়ার ইয়ানো (৩২) জানান বাজারে এখনো আমাদের তাঁতের তৈরী চাঁদর, লুঙ্গি, শার্টপিস, ব্যাগের বেশ চাহিদা আছে। মুক্তিযোদ্ধা অংসিত মং বলেন দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সরকার রাখাইনদের তাঁত শিল্পকে বাচাঁতে স্বল্প মূল্যে সুতা, রং ও স্বল্প সুদে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করেছিল। সরেজমিনে দৈনিক আজকের ভোরের কন্ঠ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক জানান, এক পাউন্ড সূতা দিয়ে দু’টি শার্ট পিচ তৈরি করা যায়। প্রতি পিচ শার্ট ৩’শ টাকা বাজারে বিক্রি করছি। প্রতিদিন একজন তাঁতী এক পিচ শার্ট তৈরী করতে পারে। এ শিল্পকে বাচাঁনোর জন্য সরকার ও বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থাকে এগিয়ে আসতে হবে। তাঁত শিল্প বাচাঁতে এ বছর প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করেছে।তাতঁ শিল্পী নিয়াটেন (২৫) জানান বর্তমানে বাজার থেকে এক পাউন্ড সুতা কিনতে হয় ৪৫০/৫৫০ টাকায়। এক পাউন্ড সূতা দিয়ে দু’টি শার্ট পিচ তৈরি করা যায়। প্রতি পিচ শার্ট ৩’শ টাকা বাজারে বিক্রি করছি। প্রতিদিন একজন তাঁতী এক পিচ শার্ট তৈরী করতে পারে। এ শিল্পকে বাচাঁনোর জন্য সরকার ও বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থাকে এগিয়ে আসতে হবে। এ প্রতিযোগীতায় রাখাইনদের তৈরী পোশাক বাজার গড়ে উঠার উজ্জল সম্ভবনা রয়েছে। সম্ভবনাময় এ শিল্পকে বাঁচাতে এখনই প্রয়োজন সুষ্ঠু পরিকল্পনা গ্রহন করা। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী পোষাক শিল্পের প্রসার ঘটছে।