ফুলবাড়ীয়া, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:
নাম আব্দুল্লাহ। বাড়ী ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার আছিম ইউনিয়নের জঙ্গলবাড়ী গ্রামে। ৪০ বছর বয়সী এই লোকটির ৩০ বছরই কেটেছে বাচ্চাদের বই বিক্রির পিছনে। এ যেনো অভিনব আরেক জীবন যুদ্ধ। পোশাকের দিক দিয়ে কালো প্যান্ট, পাঞ্জাবি, টুপি পড়েন তিনি। বেশ ভ‚শায় দেখতে অনেকটা মাইকেল জ্যাকসনের মতো। তাই নিয়মিত এ পোশাকেই সারাদেশে বিচরণ তাঁর। তাই তরুণ প্রজন্ম তাঁকে মাইকেল জেকসন নামেই ডাকে।
তাঁরও ভালো লাগে এমন ডাকে সাড়া দিতে। নিজে অশিক্ষিত, হলেও সারাদেশে বাচ্চাদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে কখনো বাসে, ট্রেনে আবার হাটবাজারে পাঁয়ে হেটে আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যত, বাচ্চাদের বই নিয়ে যান, দেশ আলোকিত করেন এমন নানা উপদেশম‚লক আকর্ষণীয় কথায় অভিভাবকদের আকৃষ্ট করে বিক্রি করেন আদর্শ লিপিসহ বাচ্চাদের অসংখ্য কার্টুন, ছবি ও ছড়ার বই। বই বিক্রির উপরই নির্ভর তাঁর পরিবারের সমস্ত খরচ। তিনি এই পেশার সাথে দুই যুগের বেশী জড়িত।
তাঁর বই পড়ে অনেকে অনেক কিছুই হলেও অর্থের অভাবে নিজের সন্তানদের সেভাবে গড়ে তুলতে পারেনি তিনি। তাঁর সংসারে ৪ছেলে ১ মেয়ের মধ্যে ১ছেলে প্রতিবন্ধী। সে-ও পায় না কোনো সরকারি ভাতা। সেই সাথে নিজের বয়স বেড়ে যাওয়া ও শরীরে অক্ষমতা দেখা দেওয়ায় সরকারের সাহায্য সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি। স্থানীয়রা বলেন, বাচ্চাদের জ্ঞান আহরণে তিনি অনেক ভ‚মিকা পালন করছে। তাকে সরকারী ভাবে সহযোগীতা করলে তিনি আরও বেশি স্ব শিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করতে পারবে।
আব্দুল্লাহ ওরফে মাইকেল জেকসন একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, আমি নিজে পড়াশোনা করতে পারিনি। তাই ছোট বেলা থেকে বাচ্চারা যাতে শিক্ষায় আকৃষ্ট হয় তাই এমন পেশায় যুক্ত হয়েছি। যখন কোনো চাকুরীজীবি বলে আমি আপনার বই পড়েছি, আজ আমি এই চাকুরী করি, এ পেশায় আছি, আমার বাচ্চার জন্যও একটা বই দেন, তখন আমার খুব ভালো লাগে। আর এটি সম্মানজনক একটি ব্যবসা। আমাকে সরকারিভাবে একটু সাহায্য সহযোগীতা করলে আমি ব্যবসাটা আরও সুন্দর ও আধুনিক করতে পারতাম।