কেএম কামরুজ্জামান ( নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি) ।।
কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ বিভাগের ১২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানিসূট মামলা করা হয়েছে।
গত ৫ মাসের অফিস ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিলসহ ৯ লাখ ৮১ হাজার ২৯১ টাকা পরিশোধ না করায়, ফজর আলী গার্ডেন সিটি ভবন মালিকের পক্ষে মো. শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞ দ্বিতীয় সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলাটি করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে বিবাদীদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছে আদালত।
বিবাদীরা হলেন, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা(ডেপুটি কমিশনার) মাধব বিকাশ দেব রায়, সহকারী কমিশনার ও বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. আব্দুল কাইয়ুম, রাজস্ব কর্মকর্তা(জালকুড়ি সার্কেল) মো. মুশফিকুর রহমান চৌধুরী, রাজস্ব কর্মকর্তা (হীরাঝিল সার্কেল) মো. আব্দুল মান্নান তালুকদার, রাজস্ব কর্মকর্তা (মৌচাক ও সিদ্ধিরগঞ্জ সার্কেল) মো. নূরুল ইসলাম, বিভাগীয় কর্তকর্তা (উপ কর কমিশনার) দিপা রানী হালদার ও মো. সোহেল রানা, রাজস্ব কর্মকর্তা আবুল কাশেম, পুরনজয় গোস্বামী, মো. ফারুক ও ট্যাক্স ইন্সপেক্টর মো. মোয়াজ্জেম হোসেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগীয় কার্যলয় করার জন্য বিবাদীগণ সিদ্ধিরগঞ্জ চিটাগাংরোড ফজর আলী গার্ডেন সিটি ভবন মালিক মো. চাঁনমিয়ার সঙ্গে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর চুক্তি করেন। ভবনটির চতুর্থ তলায় ৩ বছর মেয়াদে ৪ হাজার ১১৫ বর্গফুট একটি ও ২ হাজার ২১৫ বর্গফুট করে চারটি চুক্তি সম্পাদন করে মাসেক ১ লাখ ৮১ হাজার ৬৫০ টাকা ভাড়ায় ২০২১ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে অফিস কার্যক্রম শুরু করেন। ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে ভবন মালিক চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য বিবাদীদের চিঠি দেন। কিন্তু চুক্তি নবায়ণ না করে পূর্বের ভাড়ায় ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে আরো ৩ মাস থাকার জন্য বিবাদী বিভাগীয় কর্তকর্তা(উপ কর কমিশনার) দিপা রানী হালদার ভবন মালিককে অনুরোধ করে চিঠি দেন। এতে ভবন মালিক সম্মতি দেন। কিন্তু বিবাদীরা ৩ মাসের কথা বলে ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করে ৫ মাস ভবনে অবস্থান করেন। এতে ভবনের ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিলসহ ৯ লাখ ৮১ হাজার ২৯১ টাকা বকেয়া হয়। ভবন মালিকের বকেয়া পরিশোধ না করে বিবাদীগণ গত বছরের ৩০ মে আটি এলাকার ভূমি পল্লী আবাসিক এলাকার লেকভিউ টাওয়ারে অফিস স্থানান্তর করেন। পাওনা পরিশোধের জন্য বাদীপক্ষ বার বার তাগিদ দিলেও বিবাদীগণ দেব দিচ্ছি বলে সময় ক্ষেপন করতে থাকেন। ফলে চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি বাদী পাওনা পরিশোধের জন্য একজন আইনজীবীর মাধ্যমে বিবাদীদের লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করেন। এতেও তারা কোন কর্ণপাত করেনি। সর্বশেষ বাদী স্বশরিরের ২৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বিবাদীদের বর্তমান অফিসে গিয়ে পাওনা টাকা পরিশোধ করতে বললে তারা টাকা দিতে অস্বীকার করেন। নিরুপায় হয়ে পাওনা আদায়ের জন্য গত ২৮ এপ্রিল মামলাটি করা হয়।
জানতে চাইলে বাদী শহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের পাওনা পরিশোধ না করে অফিস স্থানান্তরে বাধা দিয়ে ছিলাম। তখন বিভাগীয় কর্মকর্তা(উপ কর কমিশনার) দিপা রানী হালদার দ্রুত সময়ে আমাদের পাওনা পরিশোধ করার আশ্বাস দিয়ে অনুরোধ করায় যেতে দিয়েছি কিন্তু তিনি তার কথা রাখেন নি। তাই মামলা করতে বাধ্য হয়েছি।
কাস্টমস অফিসে গিয়ে খবর নিয়ে জানা গেছে, যাদের সঙ্গে ভাড়ার চুক্তি হয়েছিলো, তার বদলি হয়ে অনত্র চলে গেছে। মামলার বিষয়টি অবগত স্বীকার করে বর্তমান বিভাগীয় কর্মকর্তা মাধব বিকাশ দেব রায় বলেন, এসব বিষয় আমি এ অফিসে যোগ দেওয়ার আগে হয়েছে। যেহেতু বিষয়টি আদালতে গড়িয়েছে তাই কিছু বলতে চাইনা।