উপজাতি সম্প্রদায়ের টিকে থাকার লড়াই ১২৫ কোটির কান্তারাতে আরও যা আছে

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন
Advertisement

বিনোদন ডেস্ক:
২০২২ সালে মুক্তি পাওয়া কন্নড় ছবি কান্তারা দক্ষিণ ভারত থেকে শুরু করে পুরো ভারতজুড়েই তুমুল আলোড়ন তুলেছিল। সেই ছবির মাধ্যমে অভিনেতা ও নির্মাতা ঋষভ শেঠি জাতীয় পুরস্কারও জয় করেন। দর্শকের কাছে এটি হয়ে উঠেছিল এক ভিন্নধর্মী অভিজ্ঞতা– যেখানে লোককাহিনি, আধ্যাত্মিকতা ও অ্যাকশনের মিশেল ছিল চমকপ্রদ। সেই সাফল্যের পর থেকেই দর্শকদের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল ছবির প্রিক্যুয়েল নিয়ে। অবশেষে ২ অক্টোবর ২০২৫ মুক্তি পায় ‘কান্তারা চ্যাপ্টার ১’। মুক্তির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সিনেমাটি আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসে। এখন সিনেমাটি ছুটছে ব্লকবাস্টার হিটের পথে। সিনেমাটি দেখতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে ভারতীয় দর্শক। শুধু ভারতীয় নয় দেশটির বাইরের দর্শকরাও সিনেমাটি দেখতে অধীর আগ্রহ। বাংলাদেশি দর্শকরাও সিনেমাটি দেখতে অধীর আগ্রহে বসে আছেন। ভারতীয় গণমাধ্যমের বরাতে পাওয়া সিনেমাটির নানা তথ্য নিয়েই এই আয়োজন।
‘কান্তারা চ্যাপ্টার ১’ ম‚লত দর্শকদের ফিরিয়ে নিয়ে যায় প্রথম ছবিরও আগের এক সময়ে। কান্তারার প্রাচীন ইতিহাসে। এখানে উপজাতি সম্প্রদায় আর বাংগ্রা রাজবংশের মধ্যে সংঘাতকে কেন্দ্র করে এগোয় কাহিনি। গুলশন দেবাইয়া নতুন রাজা কুলশেখর-এর চরিত্রে অভিনয় করেছেন। অন্যদিকে ঋষভ শেঠি উপজাতির নেতা বর্মের ভ‚মিকায় রয়েছেন। গল্পে দেখা যায়– কীভাবে সাহসী বর্মে তাঁর গোত্রকে নিয়ে গোপনে প্রবেশ করেন বাংগ্রা রাজ্যে। সেখান থেকেই শুরু হয় ভয়ংকর দ্বন্দ্ব, যা উপজাতির স্বাধীনতা ও টিকে থাকার প্রশ্নে পরিণত হয়। এই সংঘাতের বর্ণনা ছবিতে এক মহাকাব্যিক মাত্রা যোগ করেছে যেন। সিনেমাটি শুধু একটি অ্যাকশন ড্রামা নয়; বরং এটি ভারতীয় লোকসংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিক বিশ্বাসের সঙ্গে দর্শকদের একাত্ম করেছে। পৌরাণিক চরিত্র, উপজাতি রীতি-নীতি আর মানুষের আত্মিক সংযোগ সিনেমাটিকে দিয়েছে অনন্য মাত্রা।
প্রযুক্তিগত দিক থেকে ‘কান্তারা চ্যাপ্টার ১’ একেবারে আলাদা মাত্রায় নিয়ে গেছে ভারতীয় সিনেমাকে। হোমবালে ফিল্মস এর প্রযোজনায় নির্মিত ছবিতে ভিএফএক্স ব্যবহার করা হয়েছে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে। বিশেষত প্রাণীর উপস্থিতি আর আধ্যাত্মিক আবেশ তৈরি করতে যেভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, তা দর্শকদের বিস্মিত করেছে। ছবির সিনেমাটোগ্রাফার অরবিন্দ এস কাশ্যপ প্রতিটি দৃশ্যকে এমনভাবে ধারণ করেছেন। যেন দর্শক সরাসরি ঘটনাস্থলে উপস্থিত। কে.এম. প্রকাশ ও শোভিত শেঠির নিখুঁত সম্পাদনা ঋষভ শেঠির ভিশনকে জীবন্ত করে তুলেছে। অ্যাকশন দৃশ্যের কোরিওগ্রাফি, সংগীত এবং লোকেশনের বাস্তব ব্যবহার মিলে ছবিকে করেছে মহাকাব্যিক।
ঋষভ শেঠির অভিনয় ছবির প্রাণ। বিশেষ করে যখন তিনি দেবআবেশে ‘গুলিগা’ চরিত্রে রূপান্তরিত হন, তখন পুরো পর্দা যেন বিদ্যুৎ চমকের মতো কাঁপতে থাকে। তাঁর ভেতরে যে একযোগে ভক্তি, ভীতি আর বিস্ময়ের মিশেল তৈরি হয়, তা দর্শককে মুগ্ধ করেছে। এই ছবির লেখক, পরিচালক এবং নায়ক সবই ঋষভ শেঠি। নারী চরিত্র কানকাবতী-তে রুক্মিণী বসন্ত অসাধারণ অভিনয় করেছেন বলেই ভারতীয় গণমাধ্যমের রিভিউগুলোতে উঠে এসেছে। আর মালয়ালমের জনপ্রিয় অভিনেতা জয়রাম রাজশেখর চরিত্রে শক্তিশালী পারফরম্যান্স দিয়েছেন। যদিও গুলশন দেবাইয়ার অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে, অনেকেই মনে করছেন চরিত্রটিকে আরও ভয়ংকরভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারতেন অন্য কেউ।
বাজেট ও আর্থিক দিক ভারতীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে– ঋষভ শেঠি এ ছবির জন্য কোনো পারিশ্রমিক নেননি; বরং তিনি বিনিয়োগ করেছেন প্রযোজনায়। প্রায় ১২৫ কোটি রুপি বাজেটে তৈরি এই চলচ্চিত্র ইতোমধ্যেই বক্স অফিসে সাফল্যের পথে হাঁটছে। মুক্তির প্রথম দিনেই দর্শকরা ছবিকে বøকবাস্টার’ বলে অভিহিত করেন। মুক্তির পর মাত্র তিন দিনেই ভারতীয় বক্স অফিসে জ্বলে উঠেছে কান্তারা। তিন দিনে ছবিটি সংগ্রহ করেছে ১৬৩.৮৫ কোটি ভারতীয় রুপি। এই বিশাল আয়কে ঘিরে এটি ২০২৫ সালের ১১তম সর্বোচ্চ সফল সিনেমা হিসেবে তালিকাভ‚ক্ত হয়েছে।

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন
Advertisement

দৈনিক আমাদের কণ্ঠ