মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজার :
টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ, কাজ না করে বিল উত্তোলন, কমিশনের বিনিময়ে কাজ ভাগিয়ে নেয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে মৌলভীবাজার গণপূর্তের উপ-সহকারী প্রকোশলী মোহাম্মদ কামাল হোসেন এর বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন যাবৎ বৈষম্য শিকার গণপূর্ত বিভাগের লাইসেন্স প্রাপ্ত তালিকাভুক্ত ঠিকাদারগণসহ সুত্রে প্রকাশ- ওটিএম,এলটিএম,আরএফকিউ ও কোটেশন এই চার পদ্ধতিতে ঠিকাদারি কাজ চলে গণপুর্তে। গণপূর্তের উপ-সহকারী প্রকোশলী মোহাম্মদ কামাল হোসেন-এর নেতৃত্বে গড়ে তুলেছেন একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তিনি নিয়ন্ত্রণ করেন। তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবীতে- গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয় ও উপ-পরিচালক, দুর্নীতি দমন কমিশন, হবিগঞ্জ বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগকারীদের অনেককেই অবৈধ সুবিধা দিয়ে ম্যানেজ করে নিয়েছেন এমন দাবী একাধিক ভুক্তভোগীদের।
জানা যায়- মৌলভীবাজার পুলিশ লাইনস-এর রিজার্ভ অফিস সংস্কার/ মেরামত ও আধুনিকায়ন কাজের জন্য ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে অর্থ বরাদ্দ করা হয়। সেখানে বিল্ডিং এর চাঁদের জল চাঁদ ঢালাই না করে ১১ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। পছন্দের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার-এর বাংলোয় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সংস্কার/ মেরামত কাজের ১০ লাখ টাকা কোন কাজ না করেই উত্তোলন করেন। ওটিএম টেন্ডার প্রক্রিয়ায় বড় বড় ঠিকাদারের লাইসেন্স ব্যবহার করে টেন্ডারে অংশ গ্রহণ করে কতেক ঠিকাদার দিয়ে নামে মাত্র কাজ করে ভাগ বাটোয়ারার মাধ্যমে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। এলটিএম টেন্ডারের মাধ্যমেও যারা টেন্ডার প্রাপ্ত হন তাহাদেরকেও প্রত্যাশী সংস্থা হইতে প্রত্যয়নপত্র আনাসহ একই ভাবে তিনি নামমাত্র কাজ দেখাইয়া বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। মৌলভীবাজার পুলিশ লাইনস এর নতুন বিল্ডিং এর চলমান কাজ সমাপ্ত না করেই টাকা উত্তোলন করেন।
জানা গেছে- তিনি- বিগত- ২০০৫ইং থেকে ২০১০ইং পর্যন্ত মৌলভীবাজার জেলায় গণপূর্ত বিভাগে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে বিগত ২০১৩ইং হইতে অদ্যাবধি-২০২৪ইং, পর্যন্ত উল্লেখিত পদে মৌলভীবাজার উপ-সহকারী প্রকোশলী হিসাবে কর্মরত আছেন। কমিশন না দিলে কাজ পাওয়া আর অন্ধের দেশে চশমা বিক্রি করার সমান উল্লেখ করে বেশ কয়েকজন ঠিকাদার বলেন- দুইবার উনার বদলীর আদেশ হলেও ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে বদলীর আদেশ স্থগিত করা হয়েছে। সিন্ডিকেট এর কারণে সাধারণ ঠিকাদারগণ প্রকৃত টেন্ডার প্রক্রিয়া হতে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার গণপূর্তের উপ-সহকারী প্রকোশলী মোহাম্মদ কামাল পুলিশ লাইনস-এর জলচাঁদ ঢালাই না দিয়ে বিল উত্তোলন এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন- আপনী পত্রিকায় লিখেন। সমস্যা নাই। এখানে এককভাবে আমার কিছু করার থাকে না। নির্বাহী প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্টগণ জড়িত থাকেন। অপর এক প্রশ্নে-পুলিশ সুপার-এর বাংলোয়- সংস্কার/ মেরামত কাজ না করে বিল উত্তোলন এর বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি।
পুলিশ লাইনস-এর চলমান কাজে সমাপ্তি দেখিয়ে বিল উত্তোলন-এর বিষয়ে জানতে চাইলে- তিনি বলেন- এখানে কোন কাজ চলমান নয়। তবে, চলমান কাজের এ বিষয়ের সত্যতা জানতে সরেজমিন পুলিশ লাইস-এ গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকরা কাজ করছেন।
জানতে চাইলে মৌলভীবাজার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ), পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত, সুদর্শন কুমার রায় বলেন- জল চাঁদ ঢালাই টেন্ডারে আছে, কি না তা দেখতে হবে। এ সংক্রান্ত কাগজপত্র গণপূর্ত অফিসে আছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন পিপিএম-সেবা, বলেন- এ ধরনের কোন অনিয়ম হলে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।