রবিউল ইসলাম :
বরিশাল নগরবাসীর প্রাণের স্পন্দন বেলপার্ক আবারও দখলদারদের কবলে।মহানগরীর একমাত্র প্রাকৃতিক বিনোদন কেন্দ্রটিতে মাত্র দশ দিন আগে উচ্ছেদ অভিযান চালালেও এখন আবার আগের মতো অবাধে বসেছে দোকানপাট।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) প্রশাসকের নির্দেশে রাতভর অভিযানে বেলপার্কসহ আশপাশের সড়ক থেকে সব অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়।
নগরবাসী স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেও পরদিনই ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদাররা প্রশাসকের বাসভবন ঘেরাও করে ফের ব্যবসার অনুমতি দাবি তোলে। প্রথমে প্রশাসন অনড় থাকলেও পরে বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে ব্যবসার অনুমতি দেয়।
কিন্তু সেই সীমাবদ্ধতা মানা হয়নি। এখন পার্কের ভেতরে খেলার মাঠ, ওয়াকওয়ে ও প্রবেশপথ জুড়ে ভ্যানগাড়ী, ফাস্টফুড ও চটপটির দোকান বসে গেছে। ফলে বিনোদনের চেয়ে বেশি ভিড় দেখা যাচ্ছে দোকানি ও ক্রেতাদের।প্রতিদিন সন্ধ্যায় পার্কে ঘুরতে আসা মানুষজন বলছেন“যে শান্তির খোঁজে পার্কে আসি, সেটা এখন ভ্যানে- দোকানে ঠাসা। বসার জায়গা নেই, হাঁটার জায়গা নেই। বাচ্চাদের খেলার মাঠ পর্যন্ত ভ্যানগাড়ীতে ভরে গেছে।”
পরিবেশবিদরা সতর্ক করেছেন, এসব দোকান থেকে সৃষ্ট বর্জ্য ও প্লাস্টিক লেকে ফেলায় পানিদূষণ ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। ইতিমধ্যেই লেকের জীববৈচিত্র নষ্ট হচ্ছে।অন্যদিকে খাবার তৈরির গরম পানির কারণে একসময় শতবর্ষী রেইনট্রি গাছ মারা যাওয়ার নজিরও রয়েছে।
শহর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, জীবন-জীবিকার অজুহাতে বারবার দখলদারদেও বৈধতা দিলে বেলপার্ক ধ্বংস হবে। অথচ বেলপার্কই নগরীর মানুষের জন্য “অক্সিজেন কারখানা” হিসেবে কাজ করে।তাদের মতে, বরিশালে শিশু, নারী ও বয়স্কদের জন্য বিনোদনকেন্দ্রের ঘাটতি তীব্র। একমাত্র বেলপার্ক দখলে চলে গেলে নগরবাসীর জন্য সুস্থ বিনোদনের পরিবেশ পুরোপুরি ধ্বংস হবে।