রাজশাহী প্রতিনিধি:
একটি দুইটি দিন নয় বরং প্রায় দুইযুগ পর নিয়োগের (২২) বছর পর বেতন পেয়েছেন রাজশাহীর একটি বেসরকারি কলেজের এক শিক্ষক। নাম মো. আবু তালেব। তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলার কাটাখালী আদর্শ ডিগ্রি কলেজের দর্শন বিভাগের শিক্ষক।
দীর্ঘ সময় বিনা বেতনে তিনি শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠদান চালিয়ে গেছেন। এবার নভেম্বরের এমপিওতে তাঁর বেতন হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে তিনি বেতন হাতে পাবেন।শিক্ষক আবু তালেবের বাড়ি কাটাখালী পৌর এলাকার বাখরাবাজ এলাকায় ।
বিগত ২০০৩ সালের ৩রা মে তিনি কাটাখালী আদর্শ ডিগ্রি কলেজে দর্শন বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। কলেজের তৃতীয় শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছিলেন তিনি।
মোঃ আবু তালেব “দৈনিক আমাদের কন্ঠ” এর প্রতিবেদক’ কে বলেন, তাঁর যোগদানের আগেই আরও দুই শিক্ষক দর্শন বিভাগে ছিলেন। সরকার সেই সময় তৃতীয় শিক্ষকের বেতন বন্ধ করে দেয়। বেতন হবে হবে করে অপেক্ষায় থেকে তিনি কলেজ ছেড়ে অন্য চাকরিতে যেতে পারেননি। বাসায় গরু-ছাগল পুষে সংসারের খরচ চালিয়েছেন। এসব কারণে তাঁর সংসার শুরু করতেও দেরি হয়েছে। তাঁর দুই মেয়ে। বড় মেয়ে সবে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। ছোটটা পঞ্চম শ্রেণিতে। তাঁর নিজের বয়স ৫০ পার হয়ে যাচ্ছে।
আবু তালেব আরও বলেন, একপর্যায়ে তৃতীয় শিক্ষককে বেতন না দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে রিট করেন। আদালত তাঁদের পক্ষে রায় দেন। কিন্তু আগের দুই শিক্ষক থাকায় তাঁর বেতন হয়নি।
পরে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে জ্যেষ্ঠ দুই শিক্ষক অবসরে যান। এরপর তাঁর বেতনের বিষয়ে কলেজ থেকে ঠিকমতো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। একাই উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষ, দ্বিতীয় বর্ষসহ স্নাতক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করেছেন। এবার বেতন হচ্ছে। এই এমপিওতে তাঁকে বকেয়া বেতন দেওয়া হচ্ছে না। তিনি বকেয়া বেতনের জন্য আবেদন করবেন।
কলেজের অধ্যক্ষ জয়নাল আবেদীন গত ৫ আগস্টের পর থেকে আর কলেজে আসছেন না। মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ভয় আর প্রাণনাশের হুমকির কারণে তিনি কলেজে যেতে পারছেন না। থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
শিক্ষক আবু তালেবের বেতন না হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বেতনের জন্য আবেদন করা হলে বাতিল করে মন্তব্যের ঘরে লেখা হতো উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনা লাগবে। তারপর তাঁরা মহাপরিচালকের কাছে আবেদন করেন। তারপরেও বেতন হয়নি। কিছু বলার নেই। এবার সাধারণভাবে আবেদন করেই বেতন হয়ে গেছে।
বর্তমানে কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহরাব হোসেন। আবু তালেবের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই শিক্ষকের বিষয়ে এত দিন ঠিকমতো তুলে ধরা হয়নি। এবার সেটি করা হয়েছিল এবং তাঁর বেতন হয়েছে।