পাইকগাছায় অফ সিজন তরমুজ চাষে সফলতা 

মোঃ রফিকুল ইসলাম খান, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি :

 

পাইকগাছায় চিংড়ি ঘেরের পরিত্যক্ত আইলে অফসিজন তরমুজ চাষ করে সফল হয়েছেন পাইকগাছার কপিলমুনির রেজাকপুর এলাকার সৌখিন চিংড়ী চাষী সাঈদুর রহমান।মাত্র ৩ বিঘার ঘেরের আইলে নেটের মাচায় আবাদকৃত তরমুজ বিক্রি করে ইতোমধ্যে তিনি প্রায় দেড় লক্ষ টাকা বিক্রি করেছেন।

 

লবণ পানির ঘেরের আইলে তরমুজসহ সব্জি আবাদ উদ্বুদ্ধকরণ প্রকল্পের আওতায় পাইকগাছা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সার্বিক সহযোগীতায় প্রথম বারের মত রেড লেডি জাতের অফ সিজন তরমুজ চাষে সফলতা পাওয়ায় প্রতিদিন তার ক্ষেতের তরমুজ দেখতে ভীড় করছেন স্থানীয়দের পাশাপাশি আশপাশের মানুষ। কৃষক সাঈদুরের পাশাপাশি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের বিশ্বাস তাকে দেখে ঐ এলাকায় আগামীতে অনেকেই অফ সিজন তরমুজের আবাদ করবেন।

 

জানাগেছে, খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের রেজাকপুর গ্রামের মহরম মোড়লের ছেলে সাঈদুর রহমান মূলত একজন গরু খামারী উদ্যোক্তা। এ বছর পাইকগাছা উপজেলা কৃষি অফিসের অধিনে একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নিয়ে তিনি অফ সিজন তরমুজ চাষের ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ হন।

 

এরপর স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের পরামর্শে পাইকগাছা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বীজসহ সার, কীটনাশক ও অন্যান্য উপকরণ নিয়ে চলতি বছরের মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে তিনি নিজ মাত্র ৩ বিঘা চিংড়ি ঘেরের আইলের চারপাশে গড়ে তোলেন অফ সিজন তরমুজের ক্ষেত। সুষ্ঠু পরিচর্যা ও তদারকিতে ইতোমধ্যে তিনি তার ক্ষেত থেকে তরমুজ বিক্রি করে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা উপার্জন করেছেন।

 

এব্যাপারে সাঈদুর রহমান জানান, এবছর শুধুমাত্র শখের বসেই তিনি ঘেরের আইলে অফ সিজন তরমুজ চাষ করেন। মূলত তিনি আবাদ করলেও কষ কর্মকর্তার পরামর্শে তার পিতা মহরম মোড়ল সার্বক্ষণিক ক্ষেত পরিচর্যা থেকে শুরু করে যাবতীয় বিষয় দেখা-শুনা করেন। প্রথম বছর সফলতা পাওয়ায় আগামীতে তিনি আরো বড় আকারে আবাদ করবেন। এমনকি তাকে দেখে আগামীতে এলাকার বহু সংখ্যক কৃষক এখন তরমুজ আবাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন বলেও জানান তিনি।

 

এব্যাপারে স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অসীম কুমার দাশের নির্দেশে চিংড়ি ঘেরের আইলে অফ সিজন তরমুজসহ সব্জি চাষের আওতায় তিনি রেজাকপুর, কাশিমনগর ও রামনগর এলাকায় ১০ জন কৃষককে এ প্রকল্পের আওতায় বীজ, সার, কীটনাশক সরবরাহ ও সার্বিক পরামর্শ দিয়ে সহযোগীতা করেছেন। তবে সবার আগে সাঈদুর রহমানের প্রকল্পে হার্ভেস্ট শুরু হয়েছে। এক প্রকার বিনা খরচে চিংড়ি ঘেরের পরিত্যক্ত আইলে অফ সিজন তরমুজসহ সব্জি চাষে কৃষককূল সহজেই লাভবান হচ্ছে। তিনি আশা করছেন আগামীতে আরো বহু সংখ্যক কৃষক এ প্রকল্পের আওতায় চাষাবাদ সম্প্রসারণ করবেন।

 

এব্যাপারে পাইকগাছা উপজেলা সিনিয়র কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অসীম কুমার দাশ বলেন, প্রকল্পের আওতায় পরীক্ষামূলক বিভিন্ন চিংড়ি ঘেরের আইলে অফ সিজন তরমুজের পাশাপাশি সব্জি চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়েছিল। তার ধারণা, আগামীতে এ প্রকল্পের আওতায় আবাদ সম্প্রসারিত হবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *