নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশ আহলে হাদীস তাবলীগে ইসলাম ময়মনসিংহ জেলা শাখার অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় আমীর মুফতি মুনির উদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশ আহলে হাদীস তাবলীগে ইসলাম একটি অরাজনৈতিক, দাওয়াহ ও তাবলীগ ভিত্তিক সংগঠন। যার নিজস্ব গঠনতন্ত্র ও পরিচালনা বিধি রয়েছে। প্রায় ৪ যুগ ধরে একমাত্র কুরআন ও হাদীসকে প্রাধান্য দিয়ে আমাদের তাবলীগের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। ময়মনসিংহ জেলাধীন ফুলবাড়ীয়া উপজেলার আন্ধারিয়াপাড়া বাজার মারকাজ মসজিদটিকে কেন্দ্র নির্ধারণ করে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় তাবলীগী নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে প্রতি বছরের নভেম্বর মাসে একটি বাৎসরিক ইজতেমা পরিচালিত হয়ে আসছে। এবছর ৩২ তম কেন্দ্রীয় ইজতেমাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের দুটি গ্রুপ সৃষ্টিতে একাধিকবার মারামারি ও বাকবিতন্ডা হয়। এ ঘটনা সাংগঠনিক ভাবে সমাধান না করতে পেরে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় সাংগঠনিক ভাবে এ বছরের ইজতেমা স্থগিত ঘোষণা করে বিষয়টি স্থানীয় ও জেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়। তবুও একটি পক্ষ আঞ্চলিকতার নামে তাবলীগে ইসলামের সারাদেশের কেন্দ্রীয় ইজতেমা নিজেদের দাবি করে অবৈধ পন্থায় দখলের চেষ্টা করে। যার প্রেক্ষিতে গত ১৮ অক্টোবর জুমআর নামাজ শেষে ইজতেমাকে কেন্দ্র করে দু পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে তাবলীগের প্রায় ২০ জন কর্মী আহত হয়। তন্মধ্যে ইদ্রিস ও তারা নামে আমাদের দুজন কর্মী গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয় নি যা খুবই দুঃখ জনক ও হৃদয় বিদারক । উক্ত ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) নগরীর টাউন হল মোড় সংলগ্ন মুসলিম ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে জেলা কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, ইসলামে আঞ্চলিকতা ও জাতীয়তাবাদ হারামের শামিল । আঞ্চলিকতার দাপটে ইজতেমাকে কেন্দ্র করে তাবলীগী সাথীদের উপর হামলা দুঃখ জনক । আমরা ইজতেমার নামে সংঘাত নয় শান্তি চাই। এসময় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মুফতি মুনির উদ্দিন আরও বলেন, আপনারা বিষয়টি নিরপেক্ষ ও পেশাদারিত্ব নিয়ে দেখভাল করলে এমন সংঘর্ষ হতো না। হামলার ঘটনায় জড়িতদের আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। অন্যথায় কঠিন কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। মুফতি মুনির উদ্দিন বলেন, আন্ধারিয়া পাড়া কেন্দ্রীয় মারকাজ ও কেন্দ্রীয় ইজতেমা সহ আন্ধারিয়া পাড়াবাসী কতিপয় সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ আহলে হাদীস তাবলীগে ইসলামের প্রতিটি কর্মি জান ও মাল দিয়ে কঠিন আন্দোলনের মাধ্যমে কেন্দ্র ও ইজতেমা সহ আন্ধারিয়া পাড়া বাসীকে মুক্ত করবে, ইনশা’আল্লাহ।
তিনি বলেন সন্ত্রাস দিয়ে মানুষের বাড়ী-ঘর জায়গা জমি দখল করা গেলেও মানুষের কিন্তু মন দখল করা যায় না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট আমাদের বিনীত অনুরোধ ইজতেমাকে ঘিরে আর যেনো কোন হামলার পুনরাবৃত্তি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন ও দ্রুত সময়ের মধ্যে যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।
মুফতী মুনীর উদ্দিন আরও বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমাদের ৭ টি বিভাগের প্রতিটি শাখার কর্মীরা তাবলীগী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। ইনশাআল্লাহ আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ৬৮ হাজার গ্রামেই আমাদের এ সংগঠনের দাওয়াত পৌছে দিতে চাই। মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদসহ নানা অপারধের বিষয়ে সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রতিবাদি ও সোচ্চার হওয়ার ব্যাপারেও আহ্বান জানান তিনি।
ময়মনসিংহ জেলা সভাপতি ক্বারী মো. আব্দুল খালেক এর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা ইসহাক আলী এর পরিচালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা শহীদুল্লাহ, অধ্যাপক নুরুল হুদা , সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি ফজলুর রহমান, মাওলানা আব্দুল মোত্তালিব প্রমূখ । এসময় বক্তারা সংগঠনের কেন্দ্রীয় আমীরের অনুমতি ছাড়া ঘোষিত অবৈধ ইজতেমা বন্ধের দাবি জানান।