নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিষিদ্ধের প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগ, সায়েন্সল্যাব, মোহাম্মদপুর ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় শতাধিক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক সড়কে নেমে বিক্ষোভ করছেন।
গতকাল রোববার সকাল পৌনে ১১টার দিকে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। এছাড়া ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে অটোরিকশা চালকরা ছোট ছোট গ্রুপে মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে জমায়েত হচ্ছেন। সেখানে সড়ক অবরোধ করে সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।
চালকদের মিছিলে মৎস্য ভবন, হেয়ার রোড ও প্রেস ক্লাবের আশপাশের এলাকায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন, শাহবাগ জোনের সহকারী কমিশনার শাকিল। প্রেসক্লাবের সামনে ট্রাকের ওপর অস্থায়ী মঞ্চ বানিয়েছে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক মালিক সমিতি। সেখান থেকে দাবি আদায়ে চলছে গান-কবিতা। মাঝে মাঝে দাবি-দাওয়া তুলে ধরে বক্তব্য দিচ্ছেন মালিক ও চালকরা।
এদিকে অটোরিকশা চালকদের আন্দোলনের কারণে মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, মিরপুর ও গাবতলী সড়কে তীব্র যানজট তৈরি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বহু মানুষ। মোহাম্মদপুরে কিছু ট্রাক ও যানবাহন ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে চালকদের বিরুদ্ধে।
যাত্রাবাড়ীতেও চালকরা লাঠিসোঁটা নিয়ে অন্যান্য যানবাহন আটকে দিচ্ছেন। তবে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছে না।
গত কয়েকদিন ধরেই টানা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকরা। এর ধারাবাহিকতায় আজ সকাল থেকে মোহাম্মদপুর ও যাত্রাবাড়ীতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন তারা। মূল সড়কে অটোরিকশা চলাচল করতে দেয়ার দাবি করেছেন তারা।
এর আগে গতকাল সুপ্রিম কোর্টের আদেশ বাস্তবায়ন ও নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনা করে সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করতে দেয়ার দাবি জানায় রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদ। সেইসঙ্গে সাত দফা দাবি বাস্তবায়নসহ অতিবিলম্বে ব্যাটারিচালিত রিকশার জন্য নীতিমালা বাস্তাবায়ন করার দাবি জানায় সংগঠনটি।
গত মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) হাইকোর্ট তিন দিনের মধ্যে রাজধানীর রাস্তায় ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ দেন। সেদিন রাতেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আফসানা করিম একটি ব্যাটারিচালিত রিকশার ধাক্কায় নিহত হন। এ ঘটনা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে।
এদিকে বুধবার (২০ নভেম্বর) সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা বিক্ষিপ্তভাবে বিক্ষোভ শুরু করেন। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) এই বিক্ষোভ মহাখালী, মিরপুরসহ শহরের প্রধান সড়কগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা মহাখালী লেভেল ক্রসিং অবরোধ করেন। ফলে ঢাকা ও দেশের অধিকাংশ এলাকার সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
পরে সেনাবাহিনীর সদস্য ও পুলিশ যৌথভাবে বিক্ষোভকারীদের রেলপথ থেকে সরিয়ে দিতে অভিযান চালায়। এ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে এবং উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। বিক্ষোভকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং আশপাশের কিছু যানবাহন, ভবন ও স্থাপনা ভাঙচুর করেন।