৫ বছর বয়সে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’, সাব-রেজিস্ট্রার লুৎফর রহমান

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন
Advertisement

মোর্শেদ মারুফ

নীলফামারীর জলঢাকায় সাব-রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ লুৎফর রহমান মোল্লাকে কেন্দ্র করে মুক্তিযোদ্ধা খেতাব ও দুর্নীতির অভিযোগে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। তার জন্মতারিখ ও মুক্তিযুদ্ধকালীন বয়স নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠে আসছে, যা সরকারের মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি সন্দেহ সৃষ্টি করেছে।

জন্ম ও মুক্তিযুদ্ধকালীন বয়স নিয়ে প্রশ্ন:

জানা যায়, মো. লুৎফর রহমান মোল্লার জন্ম তারিখ ১ জানুয়ারি ১৯৬৬। যদি এই তথ্য সঠিক হয়, তাহলে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স মাত্র পাঁচ বছর ছিল। ৫ বছর বয়সে বীর মুক্তিযোদ্ধার খেতাব পাওয়া কিভাবে সম্ভব, এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে তীব্র প্রশ্ন উঠেছে। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করা হচ্ছে।

ব্যক্তিগত তথ্য ও সরকারি দায়িত্ব পালন:

তার গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর সদর উপজেলার তরমুগুরিয়া মাষ্টার কলোনীতে। বর্তমানে তিনি ঢাকা শহরের শান্তিনগরে নিজস্ব ক্রয়কৃত ফ্ল্যাটে বসবাস করেন। তবে সরকারি কাজে নিয়মিত ফাঁকি দিয়ে ঢাকায় বেশি সময় কাটানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ:

বিগত দিন পর্যন্ত গুলশান সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দায়িত্ব পালনকালে মো. লুৎফর রহমান মোল্লার বিরুদ্ধে জমির রেজিস্ট্রির মাধ্যমে সরকারি রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ উঠেছিল। বিশেষ করে একটি ১০ তলা ভবনের ২৭টি ফ্ল্যাট একত্রে জমির অংশ হিসাবে রেজিস্ট্রি করা হয়, যা আইন এবং নিয়মের পরিপন্থী বলে মনে করা হয়। এছাড়াও নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্ট থাকার কথাও আলোচনায় এসেছে।

সাতক্ষীরা সদরে সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় দুর্নীতির দায়ে তিনি এক পর্যায়ে কারাদণ্ড ভোগ করেন। এরপর তিনি স্থানান্তরিত হন।

 

বদলি ও নতুন পদায়ন:

সম্প্রতি মো. লুৎফর রহমান মোল্লাকে ঢাকা উত্তরার সাব-রেজিস্ট্রার পদ থেকে বদলি করে নীলফামারীর জলঢাকায় পদায়ন করা হয়। আইন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে। নতুন কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

চাকরিতে নিয়োগ ও মুক্তিযোদ্ধা সংক্রান্ত বিতর্ক

২০০৯ সালের ৭ ডিসেম্বর মো. লুৎফর রহমান মোল্লা সাব-রেজিস্ট্রার পদে যোগদান করেন। এক মামলার রায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায় তিনি সরকারি চাকরি পান। তবে তার জন্মতারিখ ও মুক্তিযুদ্ধকালীন বয়স নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক রয়েছে। সরকারি চাকরি পাওয়ার জন্য মুক্তিযোদ্ধা সম্পর্কিত প্রমাণপত্রাদি জমা দিতে হয়, তবে মো. লুৎফর রহমানের বয়স ও মুক্তিযোদ্ধা সংক্রান্ত তথ্য যাচাই-বাছাই নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।

প্রতিক্রিয়া ও পরবর্তী পদক্ষেপ:

সংবাদ প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট সরকারি মন্ত্রণালয়, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও জনমত চাঞ্চল্যকর প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, কীভাবে এমন ব্যক্তিকে বীর মুক্তিযোদ্ধার খেতাব দেওয়া হলো এবং কীভাবে তিনি সরকারি পদে নিয়োগ পেলেন। সরকারি হিসাব-নিকাশে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা মোকাবিলায় যথাযথ তদন্ত ও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে।

এ বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মো. লুৎফর রহমান মোল্লা  কোন মন্তব্য করেননি। তবে কিছু উৎস বলছে, দুর্নীতি ও সমালোচনার পেছনে রাজনৈতিক প্রভাব এবং আওয়ামী লীগ সরকারের অবহেলার অভিযোগ রয়েছে।

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Advertisement

Contact with your
Creative & Technology Partner

Advertisement