খেলাফত হোসেন খসরু,পিরোজপুরঃ
নিজের বেদখল হওয়া জমি ফেরত চাইতে গিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন পিরোজপুর শহরের এক ব্যবসায়ী। এমনকি এর আগেও একবার প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হয়েছেন ইট, বালু ও সিমেন্টের ব্যবসায়ী মোঃ আলমগীর হোসেন।
ভূক্তভোগী বিদেশ ফেরত ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন জানান, পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলা গ্রামে তার ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত এবং নিজের নামে জমি রয়েছে। সেই জমি গোপনে জোনাব আলী নামে এক ব্যক্তি বিএস রেকর্ড করিয়ে নেন। বিষয়টি জানার পর তিনি জমির মালিকানা ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করেন। এরপরই তার উপর চড়াও হয় প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় একবার তার উপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে।
উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নের খানাকুনিয়ারি গ্রামের বাসিন্দা আলমগীর জানান, তার মায়ের দাদা কদমতলা গ্রামের আজিজ উদ্দিন সিকদারের তিন ছেলে ছিল যার মধ্যে আলমগীরের নানা আইয়ুব আলী সিকদার একজন। তবে আজিজ উদ্দিনের এক ছেলে আব্দুর রহমান ১৯৫৩ সালের পূর্বে মারা যাওয়ায় তখন তার স্ত্রী ও সন্তানেরা আজিজ উদ্দিন এবং তার স্ত্রী আয়জন বিবির সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হয়। এরপর আলমগীরের নামে ১ একর ৫৫ শতাংশ জমি রেজিস্ট্রি করে দেয় তার নানা আইয়ুব আলী। এছাড়াও সে ওয়ারিশ সূত্রে আরও ১ একর ৮৮ শতাংশ জমির মালিক হন। পরবর্তীতে জীবিকার তাগিদে আলমগীর ১৯৯৩ সালে কুয়েত গিয়ে সাত বছর পর বাংলাদেশে ফিরে আসে। তবে এ সময়ের মধ্যে আজিজ উদ্দিনের দ্বিতীয় স্ত্রী মতিজান বিবি’র ছেলে খুলনায় বসবাসকারী জোনাব আলী এবং আব্দুর রহমানের নাতি রফিকুল ইসলাম কৌশলে আলমগীরের নামে থাকা ১ একর ৫৫ শতাংশ এবং ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া আরও ১ একর ৮৮ শতাংশ জমি নিজেদের নামে রেকর্ড করিয়ে নেয়। এরপর ২০০৭ সালে জোনাব আলী ৩২ শতাংশ জমি স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে এবং ৬১ শতাংশ জমি দুই ছেলে শাহজাহান সিকদার ও আব্দুস সোবাহান সিকদারের নামে হেবার ঘোষণাপত্র করে দেয়। পরবর্তীতে কদমতলা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ রিয়াজ হোসেন উজ্জ্বল এর সহায়তায় একটি ভূয়া ওয়ারিশ সনদপত্র তৈরি করে জমি মিউটেশন করতে গেলে আলমগীরের কাছে জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে যা সিআইডি’র ফরেনসিক বিভাগের তদন্তে প্রমানিত হয়।
এসব ঘটনার প্রতিবাদ করায় অভিযুক্তরা পিরোজপুর শহরে পুরাতন ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আলমগীরের উপর হামলা করে। এ ঘটনায় আলমগীর বাদী হয়ে পিরোজপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন এবং ঘটনার সাথে জড়িত তিন জনকে অভিযুক্ত করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। তবে বিচারাধীন এ মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য আলমগীরকে প্রতিপক্ষের লোকজন হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে অন্যের নামে রেকর্ড হওয়া নিজের জমি ফেরত পাওয়ার জন্য আদালতে মামলা দায়েরের পর নিজের পক্ষে রায় পেয়েছেন আলমগীর। তবে এখনো সে পুরো জমির মালিকানা বুঝে পান নাই। অভিযোগের বিষয়ে ইউপি সদস্য রিয়াজ হোসেন উজ্জ্বল জানান, তিনি কাগজপত্র যাচাই বাছাই করেই ওয়ারিশ সনদপত্র প্রদান করেছিলেন। এছাড়া নিজের জমির কাগজপত্র নিয়ে পতিক্ষের লোকদের সাথে বসার জন্য আলমগীরকে আহবান জানান তিনি। এছাড়া আলমগীরকে হুমকি দেওয়ার বিষয়টিও সত্য নয় বলে দাবি তার।
তবে মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় এ বিষয়ে অন্যতম অভিযুক্ত রফিকুল ইসলামের কোন বক্তব্য পাওয়া যায় নাই।