বরিশাল বিভাগের ৩২৮টি স্থানে বসছে কোরবানির পশুর হাট

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন
Advertisement

বরিশাল জেলা প্রতিনিধি :

আর মাত্র কদিন পরেই মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ উল আযহা। ত্যাগের মহিমায় পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। আর তাই কোরবানির পশুর চাহিদা মেটাতে প্রতিবারের ন্যায় এবারও বরিশালে বসছে স্থায়ী এবং অস্থায়ী পশুর হাট। বরিশাল জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, এবার মহানগরীসহ বরিশাল জেলায় কোরবানি উপলক্ষে অনুমোদন দেয়া হয়েছে ৭৯টি পশুর হাট। যার মধ্যে বরিশাল সিটিতে অনুমোদন দেয়া হয়েছে ৩টি অস্থায়ী পশুর হাট। তবে স্থায়ী এবং অস্থায়ী মিলিয়ে এবার পশুর হাট বসবে ৯৩টি। পুরো বিভাগের ছয় জেলায় পশুর হাট বসছে ৩২৮টি।

হাটগুলোতে কোরবানি যোগ্য এবং মানসম্মত পশু বিক্রির বিষয়টি নিশ্চিত করতে বিভাগের ছয় জেলায় মোট ১৩৬টি ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র বরিশাল জেলায় ৩১টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম গঠন করেছে জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। দুটি হাটের জন্য একটি করে টিম কাজ শুরু করেছে। এছাড়া সিটি এলাকার স্থায়ী এবং অস্থায়ী মিলিয়ে চারটি হাটে কাজ করছে সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ।

তাছাড়া পশু বিক্রেতা, ক্রেতাদের নিরাপত্তা, মহাসড়কে চাঁদাবাজি রোধসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে মেট্রোপলিটন এবং জেলা পুলিশ। পাশাপাশি বরিশাল বিভাগজুড়েই নিরাপত্তা জোরদারের টহল ও চেকপোস্ট বসিয়েছে র‌্যাব-৮।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের হাট-বাজার শাখার তথ্য অনুযায়ী এবার কোরবানি উপলক্ষে তিনটি অস্থায়ী এবং একটি স্থায়ী হাট বসবে বরিশাল সিটি এলাকায়। এর মধ্যে রূপাতলী এবং কালিজিরা বাজার এলাকায় দুটি, কাগাশুরায় ১টি অস্থায়ী এবং বাঘিয়া এলাকায় একটি স্থায়ী হাট বসছে। ঈদের তিনদিন আগে থেকে ঈদের পূর্বের দিন রাত পর্যন্ত অস্থায়ী হাটগুলোতে পশু বেচা কেনার অনুমতি দেয়া হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদের তিনদিন আগে থেকে অস্থায়ী হাট বসার অনুমতি থাকলেও এরই মধ্যে হাটগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। হাটগুলোতে নিয়ে আসা হচ্ছে পশু। তবে এখন পর্যন্ত বরিশাল অঞ্চলের বাইরে থেকে গরু বা খাসি নিয়ে আসা শুরু হয়নি বলে জানিয়েছেন ইজারাদাররা। মঙ্গলবার অথবা বুধবারের মধ্যেই হাটগুলো পশুতে পরিপূর্ণ হবে বলে আশাবাদী তারা।
তবে অন্য জেলা থেকে পশু না আসলেও বরিশালের পশুতেই কোরবানির চাহিদা পূরণ হবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, এ বছরে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৪ লাখ ৩২ হাজার ৬১১টি।

বিভাগের ২৬ হাজার ৫৭৮ জন খামারি ও কৃষকদের কাছে মজুত রয়েছে ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৪৫৪ টি। এর মধ্যে বিভাগের ২ লাখ ১০ হাজার ৬৪টি, ৬৭ হাজার ৬৬৪টি বলদ, ৩৮ হাজার ৩১৭টি গাভি, ১ লাখ ১০ হাজার ৪৯টি ছাগল, ১২ হাজার ৩৫টি ভেড়া এবং অন্যান্য ৫৫টি কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে। এতে করে চাহিদা মেটানোর পরেও উদ্বৃত্ত থাকবে ১৬ হাজার ৮৪৩টি পশু।
প্রাণিসম্পদ বিভাগের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বরিশাল জেলায় কোরবানির পশুর প্রয়োজন ১ লাখ ১২ হাজার ৯৪৭টি, মজুত রয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৫৫৭টি, ঝালকাঠি জেলায় ৩১ হাজার ১৯টির বিপরীতে রয়েছে ৩১ হাজার ১১৪টি, পিরোজপুরে ৪১ হাজার ২৫০টির বিপরীতে রয়েছে ৪৬ হাজার ৪৯৭টি, পটুয়াখালীতে ১ লাখ ২৩ হাজার ২১০টির বিপরীতে রয়েছে ১ লাখ ২৩ হাজার ৭৪১টি, বরগুনায় ৩২ হাজার ২৩১টির বিপরীতে মজুত রয়েছে ৩৮ হাজার ৯৫টি, ভোলায় ৯১ হাজার ৯৫৪টি বিপরীতে মজুত রয়েছে ৯২ হাজার ৪৫০টি।

বরিশাল বিভাগের বেশিরভাগ খামারি বেশি লাভ করার আশায় গরু এবং খাসি নিয়ে ছুটছেন ঢাকা, খুলনা এবং চট্টগ্রামে। খামারিরা বলছেন, দুই-তিন বছর ধরে একটি পশু লালন পালন করে কোরবানি যোগ্য করা হয়। কিন্তু বরিশালের হাটগুলোতে কোনবারই ভালো দাম পাননা। তাই একটু ভালো লাভের আশায় ঢাকা, চট্টগ্রাম বা খুলনার হাটগুলোতে পশু বিক্রির জন্য নিয়ে যান।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কোরবানির কয়েকদিন বাকি থাকলেও হাটগুলো বেচা কেনা শুরু হয়েছে। তবে এখানো তেমন জমে উঠেনি। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় হাটে তেমন পশু এবং ক্রেতা আসতে শুরু করেনি। তার পরও মোটামুটিভাবে বেচা কেনা চলছে।

তিনি বলেন, আমাদের দপ্তরে জনবলের প্রচুর সংকট রয়েছে। তার মধ্যে থেকেই আমরা কোরবানির হাটগুলোতে সুস্থ, রুষ্টপুষ্ট এবং কোরবানি যোগ্য পশু নিশ্চিত করার জন্য জেলায় ৩১টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। বিভাগজুড়ে এর সংখ্যা ১৩৬টি। তবে সিটি এলাকার হাটগুলোতে দায়িত্ব পালন করবে সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ। এরই মধ্যে তারা হাটগুলোতে কাজ শুরু করেছে। সংকট থাকায় টিমগুলো ঘুরে ঘুরে হাটগুলোতে দায়িত্ব পালন করবে।
বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও জেলার স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক লুচিকান্ত হাজং জানিয়েছেন, এবার গোটা বিভাগজুড়েই পশুর হাট অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তবে এর মধ্যে শুধুমাত্র মহানগরীসহ জেলার ১০টি উপজেলায় তিনদিনের জন্য মোট ৭৯টি অস্থায়ী পশুরহাটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এছাড়া ১৪টি স্থায়ী হাট রয়েছে। সব মিলিয়ে অনুমোদিত ৯৩টি হাট বসবে এ জেলায়।

তিনি বলেন, হাটগুলো পশু, ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে জেলা এবং মেট্রোপলিটন পুলিশ। প্রতিটি হাটেই পুলিশের কন্ট্রল রুম খোলা হয়েছে।

 

 

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Advertisement

Contact with your
Creative & Technology Partner

Advertisement