হারুন-অর-রশিদ বাবু, রংপুর :
রংপুরের পীরগাছায় যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধূকে নির্মম নির্যাতন করে গর্ভপাত করিয়েছে পাষণ্ড স্বামী ও তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এ ঘটনায় মামলার দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। গৃহবধূ বাদী হয়ে মামলা করায় মামলা তুলে নেয়ার হুমকি আসামির পরিবারের।
গত ৯ ই এপ্রিল পীরগাছা থানায় ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করলেও আসামিরা গ্রেফতার না হওয়ায় শঙ্কায় ভুক্তভোগী পরিবার।
এলাকাবাসী জানায়, ঘটনার দিন গৃহবধূর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল দিয়ে পুলিশ এসে উদ্ধার করে। পরে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে চিকিৎসা নেয়৷
তার উপর অমানবিক নির্যাতন ও পেটের সন্তান গর্ভাপাতের ঘটনায় পীরগাছা থানায় বাদি হয়ে ৪ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন ওই গৃহবধূ। আসামিরা হলেন স্বামী- শাহ্ মোঃ আরিফুর রহমান সবুজ, শশুর- শাহ্ মোঃ শাখাওয়াত হোসেন, শাশুড়ি মোছাঃ আঞ্জুমান আরা বেগম ও দেবর শাহ্ মোঃ আশিকুর রহমান। অভিযুক্ত আরিফুর রহমান সবুজ এনআরবিসি ব্যাংকে কর্মরত আছেন। তার বাবা পাওটানা ফাজিল মাদ্রাসার প্রাক্তন শিক্ষক।
মামলা ও পারিবারিক সুত্রে জানাযায়, উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের আদম কুটির পাড়া এলাকার মাদ্রাসা শিক্ষক শাহ- মোঃ শাখাওয়াত হোসেনের ছেলে আরফিুর রহমান সবুজের সাথে রংপুর মহানগরীর কেরানীর হাট বিন্যাটারি এলাকার মহুবার রহমানের মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে ২০১৮ সালে সবুজ বাড়ি থেকে পালিয়ে নিয়ে বিয়ে করেন মহুবার রহমানের মেয়েকে৷ পরে বিষয়টি উভয়ের পরিবার দীর্ঘদিন পর মেনে নিয়ে পূনরায় ২০২১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে সম্পন্ন করেন।
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ জানায়, আমার বিয়ের পর থেকেই আমার স্বামী ও শশুর- শাশুড়ি পাঁচলক্ষ টাকা যৌতুকের জন্য বিভিন্ন সময় চাপ দেয়৷ আমি ও আমার পরিবার দিতে অস্বীকার করলে তারা প্রতিনিয়ত মারধর করে। আমাকে হুমকি দেয় যে আমি বাপের বাড়ি থেকে টাকা না নিয়ে আসা পর্যন্ত সন্তানের মুখ দেখতে পারবো না।
ওই গৃহবধূ আরও বলে, আমি যাতে গর্ভধারন না করি এজন্য আমার স্বামী বিভিন্ন সময় মারধর করে আমাকে জন্মনিয়ন্ত্রণ ওষুধ সেবন করাতে বাধ্য করতো। একপর্যায়ে আমি চারমাসের অন্তঃসত্তা হলে আমাকে বেধড়ক মারধর করে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার ওষুধ খাওয়ায়।
এ দিকে পীরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ ছুটিতে থাকায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নুর আলম বলেন, আসামিরা পলাতক। আসামি ধরতে চেষ্টা চলছে।
এবিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার ( সি-সার্কেল) আসিফা আফরোজ আদরী বলেন, তদন্ত চলমান আছে, আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।