নাজিরপুর (পিরোজপুর) প্রতিনিধি :
পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার জনবহুল এলাকা মাটিভাঙ্গা কলেজ মোড়, এখানে নামসর্বস্ব একটি গ্যাস কারখানা সরকারি নীতিমালা শর্ত লঙ্ঘন করে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় ভুক্তভোগীরা। স্থানীয়রা আরো অভিযোগ করেন মাটিভাংগা পুলিশ ফাঁড়ির নাকের ডগায় এমন অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন কাটা রফিক নামের এক আওয়ামী লীগের প্রভাশালীব্যক্তি, কিন্তু পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেননি। অতীতে সাবেক আ,মীলীগ নেতাদের মাসোওয়ারা দিয়ে চালাতেন এ অবৈধ কারখানা। বর্তমানে স্থানীয় বিএনপি নেতার ছত্রছায়ায় রমরমা ভাবে এ অবৈধ কারখানাটি চালিয়ে যাচ্ছেন।অভিযোগ পেয়ে সোমবার (১৬ জুন ) বিকেলে সাংবাদিকরা কারখানায় গেলে দ্রুত সটকে পড়েন কারখানার মালিক ও শ্রমিকরা।
বিষয়টি প্রশসন ও সাংবাদিকেরা অবগত করলে ঘটনা স্থলে উপস্থিত হন পিরোজপুরের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন, সেনাবাহিনীর মেজর ইশরাক এর একটি টহল টিম, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম এসময় তারা আইন শৃঙ্গলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। কারখানা ঘুরে বিভিন্ন ব্রান্ডের স্টিকার ও খালি গ্যাস সিলিন্ডার, ক্যাপসহ নানা ধরনের উপকরন পান। পরে বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. লিপু শরীফের জিম্মায় রাখেন। পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ গ্রহনের স্বার্থে স্থানীয় জনতাকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করার পরামর্শ দেন এবং কারখানা মালিক রফিককে ফোনে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য নির্দেশ দিয়ে তারা ঘটনা স্থল ত্যাগ করেন।
শরিফুল আমল নামের এক ব্যক্তি জানান, আমার ৯ শতক জমি দখল করে নিয়ে গেছে। আমার বাড়ির যাতায়াতের রাস্তা গ্যাসের সিলিন্ডার রেখে বন্ধ করে দিয়েছে। বসতির ভিতরে গ্যাস কারখানা থাকায় আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। কয়েকবার এখানে আগুন ধরে পুড়ে গেছে। একই জায়গার বাদশা মিয়া ১ শতক ও সবুর মিয়ার ৩ শতক জমি জোড় করে দখল নিয়েছে।
সবুর ও বাদশা মিয়া জানান, গায়ের জোড়ে গ্যাস ব্যবসায়ী কাটা রফিক আমাদের জমি দখল করে নিয়েছে। রফিকের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে সে তাদের হুমকি দেয়।
স্থানীয় এক গ্যাস ব্যবসায়ী আসাদ শেখ জানান, কাটা রফিক যখন গ্যাসের ব্যবসা শুরু করে তখন আমি তাকে বোতল চিনিয়েছি। কিন্তু তার কারণে এখন ব্যবসা করতে পারি না। আমাদের চেয়ে গ্যাসের দাম ৫০-১০০ টাকা কম নেয় এবং কাটা রফিক গ্যাসের বোলত কেটে বিক্রি করে ওজনে কম দেয় এখানে বসে গ্যাস প্যাকেটজাত করে। স্থানীয় কয়েকজন জানান, রাত-দিন এখানে ট্রাকে আনলোড হয় তার শব্দে ঘুমাতে পারি না। এখানে কয়েকবার আগুন লেগেছে। গ্যাসের গন্ধে থাকা কষ্টের। প্রশাসন ও স্থানীয়দের জানানলে তারা রফিকের সঙ্গে পেড়ে উঠতেছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি বলেন, কাটা রফিকের এখানে অবৈধ ভাবে বিভিন্ন কার্যক্রম চালানো হয়। তিনি কয়েকটি মামলার আসামীও শূণ্য থেকে রাতারাতি আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে এই কাটা রফিক।
অভিযোগের ব্যাপারে কাটা রফিক গ্যাস কারখানা মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি খুলনাতে আছেন বলে ফোন কেটে দিয়ে। তারই বোন জামাই স্বরূপকাঠী উপজেলার ব্যবসায়ী জাকিরকে পাঠিয়ে সাংবাদিক ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।
সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন সাংবাদিক ও স্থানীয়দের বলেন, তিনি একজন গ্যাস ব্যবসায়ী। একটি গ্যাসের ডিলার। তিনি বিভিন্ন কোম্পানির গ্যাস বিক্রি করেন। খালি বোতল গুলো নিজের মত করে রিফেল করে বিভিন্ন কোম্পানির ট্যাগ লাগিয়ে বিক্রি করে এটা সম্পূর্ণ অবৈধ। ওনার যদি লাইসেন্স থাকে ওই অনুসারে গ্যাস এনে বিক্রি করতে পারবেন কিন্তু ওনার রিফিল করার কোনো সুযোগ নাই। অনেক গুলো খালি বোতল ছিলো এবং রিফিল করা যন্ত্রপাতি ছিলো। এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউএনও স্যার এর পরবর্তী ব্যবস্থা নিবেন।