মোঃ রফিকুল ইসলাম খান, পাইকগাছাঃ
পাইকগাছার লতার শংকরদানা সরকারি খাস খালে বাঁধ ও নেট-পাটা দিয়ে লবন পানি মাছ চাষে বর্ষা মৌসুমে শুরুতে পুর্বের ন্যায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।এলাকাবাসীর অভিযোগ প্রবহমান প্রায় ৩ কিঃ মিঃ দৈর্ঘ্যের খাস খাল বন্দোবস্ত দিয়ে ৯ খন্ডে বাঁধবন্ধী ও নেট-পাটা দিয়ে মাছ চাষ করায় প্রতিবছর জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে ঘরবাড়ি, ফসলি ক্ষেত, রাস্তাঘাট তলিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটে। এ বছরেও সেই একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করে এসব বাঁধ ও নেট-পাটা অপসারণ করে ৩ গ্রামের জলবদ্ধতার নিরসনসহ ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মানাধীন সরকারি পিচের রাস্তা রক্ষার দাবি করেছেন।
জানা গেছে, উপজেলার লতা ইউপি’র হাড়িয়া ওয়াপদা রাস্তা হতে থেকে হাড়িয়া খাসমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় ৩ কিঃ মিঃ দৈর্ঘ্যের শংকরদানা নামে একটি সরকারি খাস খাল প্রবাহমান। এ খাল দিয়ে শংকরদানা, হাড়িয়া এবং সচিয়ারবন্দ সহ বিভিন্ন এলাকার পানি নিষ্কাশন হয়। ইতোপুর্বে এ খালটি একাধিক ব্যক্তি বন্দোবস্ত নিয়ে ৯ টি খন্ড করে বাঁধবন্ধী ও নেট-পাটা দিয়ে মাছ চাষ করছে।
এসব ব্যক্তিরা হলেন স্থানীয় ক্লিনটন বিশ্বাস, পঙ্কজ কুমার, দীপঙ্কর, বাবু লাল বিশ্বাস, বরুণ বিশ্বাস, স্বজল, সমীর কুমার মন্ডল, অসীম কুমার সরকার ও সত্যনন্দ রায়।
এলাকাবাসী অভিযোগ, এসব ঘের মালিকের কারনে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ডুবে মরতে হয়। বাড়ি ঘর ফসলসহ চলাচল রাস্তা তলিয়ে ক্ষয়ক্ষতি করেন।
স্থানীয় সঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, ঘের করতে কারোর আপত্তি নেই,কিন্তু সময় মত খাস খাল দিয়ে জল সরবরাহ না করায় মৌসুমের শুরতেই বসতবাড়ি,উঠান ও রাস্তায় লবন পানি উঠে গেছে।
এ বিষয়ে মমতা সরকার ও ঝর্ণা শীল জানান, গত ক’দিনের টানাবর্ষায় বসতবাড়ির উঠানে পানি উঠেছে এবং নির্মাণাধীন একমাত্র চলাচল রাস্তা ডুবু-ডুবু ভাব। তবে, সত্যরঞ্জন সরকার বলেন, ভোগান্তি লাঘব করতে হলে এসব বাঁধ ও নেট-পাটা অপসারণ করা খুব জরুরি।
এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে ঘের মালিক ক্লিনটন বিশ্বাস বলেন, স্লুইস গেটের মুখে আমার অংশের ৬ বিঘা জমিতে ঘের করছি। অতি বর্ষায় জলবদ্ধতারর কথা স্বীকার করে তিনি আরোও বলেন, আমি স্লুইস গেট দিয়ে সময় মত জল সরিয়ে থাকি কিন্তু অন্য ঘের মালিকের অলসতার কারনে জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সুনীল কুমার মন্ডল জানান, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে এলাকার যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটির কার্পেটিং কাজ চলমান রয়েছে। এ রাস্তাটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আমাদের সকলের। তিনি পানি সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ব্যক্তি বা সরকারি ভাবে কোন পদক্ষেপ নিলে তিনি সহয়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী স্বজল বিশ্বাস জানান, নির্মানাধীন কার্পেটিং (রাস্তা) টেকসই বা রক্ষা করতে হলে জলবদ্ধতার নিরসন খুব জরুরি। ক’দিনের ভারি বর্ষায় নাজুক অবস্থার জন্য তিনি খালে বাঁধবন্ধী ও নেট-পাটাকে দায়ি করে ঘের মালিকদের জল সরবরাহে পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।