বগুড়ায় জুলাই অভ্যুত্থানের ছাত্রদের সন্ত্রাসী বলা ইউএনওর বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন
Advertisement

মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ, বগুড়া

ছেলেটির নাম মুশফিক, জুলাই আন্দোলনে বগুড়ায় তার বেশ ভুমিকাও রয়েছে। স্পষ্টভাষি মুশফিকসহ শতাধিক তরুন সারিয়াকান্দি উপজেলায় নানা ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে দাড়াতেই পাড়লো না। ল্যাং মেরে ফেলে দিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার রহমান। একবার নয় দুবার নয়, বারবার দাড়ানোর চেষ্ঠা করলেও দাড়াতেই দেয়নি। কখনো গ্রেফতার আবার কখনো সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অপবাদ দিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতে সাজার ভয় দেখিয়ে এক পর্যায়ে কোনঠাসা করে ফেলেছেন।

মুশফিকের দাবি, বর্তমানে মিডিয়ার সহযোগীতা ছাড়া তাদের আর কোনও উপায় নেই। জুলাই পরবর্তী সময়ে, সাহরিয়ার রহমান সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের পরপরই, মুশফিকসহ শতাধিক তরুন এই কর্মকর্তার অফিস কক্ষে যায়, তখন ইউএনও মহাদয় তাদের পরিচয় জেনে রাগ হয়ে আক্রমনাত্মকভাবে বলেন, তোমরাইতো আজকের এই অবস্থার সৃষ্টি করেছো, তোমাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য আজ এই দেশের পরিনতি। এর পরবর্তীতে যেনো তোমাদেরকে উপজেলার আশেপাশেও না দেখি।

মুশফিক বলেন, এই ঘটনার পরে আমরা নানা ধরনের সামাজিক কাজ ও অপরাধ নির্মূল করতে চেষ্টা করেছি কিন্তু বদ মেজাজী এই ইউএনওর জন্য তা সম্ভব হয়নি। তিনি যোগদানের পর থেকেই সারিয়াকান্দি উপজেলায় অপরাধের অভয়ারণ্যে পরিনত হয়েছে। এখানে তার অনুমতিতে অসংখ্যা অবৈধ বালুর পয়েন্ট চলছে, পৌরসভার ৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজে হয়েছে ভাগবাটোয়ারা, পৌর টোলের নামে চলছে চাঁদাবাজি, ইতিমধ্যে নিজের ইচ্ছেমতো  উপজেলা পরিষদের ভেতরের বেশ কয়েকটি গাছ কেটে ফেলেছেন অর্থাৎ সারিয়াকান্দি উপজেলাকে তিনি বর্তমানে নিজের ভাবতে শুরু করেছেন, যা  ইচ্ছে তাই করছেন। কেউ প্রতিবাদও করার সাহস পায়না, যারা করার চেষ্টা করে তাদেরকে নানা ভয়ভীতি অথবা যেকোনোভাবে ম্যানেজ করে ফেলেন।

মুশফিক আরো বলেন, এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানববন্ধনও করা হয়েছিল। ব্যানারের ছবিটি দেন মুশফিক, সেখানে লেখা আছে, ফ্যাসিবাদের দোসর, আওয়ামী লীগ এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ-এর পুনর্বাসনকারী, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টিকারী, র্ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টকারী, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদদের এবং আহতদের সন্ত্রাসী আখ্যা প্রদানকারী, সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার রহমানের চাকুরী অপসারনের ১ দফা দাবীতে “মানববন্ধন” আয়োজনে: বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সারিয়াকান্দি উপজেলা, বগুড়া। এর পরবর্তী সময়ে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পরে একটি তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছিল কিন্তু বর্তমানে তার কি অবস্থা সেটা জানেনা মুশফিকরা।

কথা হয় স্থানীয় অনেকের সাথেই তারা বলেন, বিগত সময়ে অনেক ইউএনও এখানে এসেছে কিন্তু এতো বদমেজাজী লোক আমরা দেখিনি। সাধারণ মানুষরা তার কাছে মানুষই নয়, কারনে অকারনে প্রতিনিয়ত মানুষের সাথে দুরব্যবহার করা তার এক প্রকার নেশায় পরিনত হয়েছে। তারা আরোও বলেন কয়েক মাস আগে উপজেলায় মাসিক সমন্বয় সভায়, কর্ণিবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সাথে চরম দুরব্যবহার করে, এক পর্যায়ে ওসির বডিগার্ড হতে বলে চেয়ারম্যানকে এবং আনসার দিয়ে বের করে দেয়ার চেষ্টা করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন উক্ত চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনসহ অনেকেই।

সামান্য একটি ঘটনা নিয়ে সদর ইউনিয়নের বিতান মেম্বরকে বস্তায় ভরে যমুনা নদীতে ফেলে দিতে চায়, বিষয়টি নিয়েও দফায় দফায় আন্দোলন হয়। আনসার সদস্যরা ৬ মাসের বকেয়া বেতন পরিষদের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে দাবি জানালে, আনসারদের সাথে চরম দুরব্যবহার করে এবং অফিসে ডেকে অপমান অপদস্ত করে।

উপজেলার একটি বিল্ডিংয়ের কাজের ঠিকেদার পুটু সাহেবের ফোরম্যন রবিউল ইসলাম রঞ্জুকে বিনা কারনে ভ্রাম্যমান আদালতে ৭ দিনের সাজা দেয়। এই বিষয়টি নিয়েও অনেক হৈচৈ হয় কিন্তু কোনই কাজ হয়নি।

সরেজমিনে কয়েক মাসের অনুসন্ধানে উঠে আসে চাঞ্জল্যকর তথ্য। বর্তমানে বিভিন্ন সিন্ডিকেডদের মদদ দাতা, অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের অভয়াশ্রম তৈরির মুল কারিগর, অত্যন্ত দুরব্যবহারকারী একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে খ্যাত শাহরিয়ার নামের এই কর্মকর্তা। নানা ধরনের ঘটনায় বিগত সময়ে তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন, মিছিলসহ নানা ধরনের কর্মসূচী দিয়েছে উপজেলা বিভিন্ন স্তরের সাধারণ মানুষগুলো কিন্তু এসবে কোনই কাজ হয়নি। একারনে ইতিমধ্যে প্রশাসনের প্রতি একধরনের বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

ইউএনও শাহরিয়ার যোগদানের পর থেকে, বিগত সময়কে হার মানিয়ে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে এখানে। প্রতিনিয়ত তার কার্যালয়ে চলে বালু ব্যবসায়ীদের নিয়ে নানা ধরনের আলাপ আলোচনা, এতে করে সাধারণ মানুষগুলো কোনো পাত্তাই পায়না তার অফিসে। ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষার পর কোনভাবে তার সাথে দেখা করার সৌভাগ্য হলেও, তার চরম বিরক্তি ও দুরব্যবহারে অত্যন্ত কষ্ট নিয়ে বের হতে হয় সেবা প্রত্যাশীদের। তবে অর্থ হলেই এখানে সব সেবাই মেলে অনুমোদনও পাওয়া যায় অবৈধ্য কাজের। হাটের ইজার, ঘাটের ইজারা, টেন্ডারসহ প্রত্যেকটি কাজেই রয়েছে তার দাপট।

বিষয়গুলো জানতে অভিযুক্ত নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজার সাথে কথা বলে তিনি বলেন, এরকম অভিযোগ পাচ্ছি বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Advertisement

Contact with your
Creative & Technology Partner

Advertisement