বিশেষ প্রতিনিধিঃ
বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার কারণে,দেশের সরকারি,আধা সরকারি,স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুর্নীতি মরণব্যাধি ক্যান্সার এর রূপ ধারণ করেছিল।বিগত সরকারের সময়ে জন্ম নেওয়া মহা দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী,এমপি,আমলা,শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারির মূল হোতা সালমান এফ রহমান,ব্যাংক কেলেঙ্কারির হোতা এস আলম গ্রুপ এর মালিক শামসুল আলম,ছাগল কাণ্ডে আলোচিত এনবিআর এর সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমান,বন খেকো মোশারফ,বিসিএস প্রশ্ন ফাঁস কেলেঙ্কারির হোতা আবেদ আলী,পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজির আহমেদ,সিআইডি সাবেক প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া গংদের অনিয়ম দুর্নীতির ফিরিস্তি একে একে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে আসার পর এইবার বেরিয়ে আসলো আরেক মহা দুর্নীতিবাজ বর্তমানে চাঁদপুর নৌ পুলিশ পরিদর্শক মোজাম্মেল হকের নাম।
দীর্ঘ অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে বর্তমানে চাঁদপুর জেলা নৌ পুলিশে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক মোজাম্মেল হকের নজিরবিহীন অনিয়ম-দুর্নীতি ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের বিবরণী। বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে সাব ইন্সপেক্টর (এস আই) পদে যোগদানের পর থেকে মোজাম্মেল হক জড়িয়ে পড়লেন নারী কেলেঙ্কারি ও অনিয়ম-দুর্নীতিতে। মোজাম্মেল হকদের মত কপিপয় কিছু অসাধু পুলিশ সদস্যদের কারণে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী কুলুষিত হচ্ছে। বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর ক্ষমতা অপব্যবহার করে বর্তমানে কয়েক শত কোটি টাকার মালিক মহা দুর্নীতিবাজ সুচতুর পুলিশ পরিদর্শক মোজাম্মেল হক।মোজাম্মেল হক থাকা এস আই পদে থাকাকালীন দীর্ঘ সময় চট্টগ্রাম জেলার ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকা হিসেবে খ্যাত সীতাকুণ্ড মডেল থানার চাকরির সুবাদে সীতাকুন্ড এলাকায় গড়ে তুলেল নজিরবিহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির সিন্ডিকেট।পরবর্তীতে ধীরে ধীরে পদোন্নতি নিয়ে ওসি তদন্ত পদে পদোন্নতি পাওয়ার পরে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ের মাধ্যমে আবারও চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড মডেল থানায় বদলি হয়ে যান।মহা দুর্নীতিবাজ মোজাম্মেল হক সীতাকুন্ড মডেল থানায় ওসি তদন্ত পদে থাকাকালীন একই থানার আরেক মহা দুর্নীতিবাজ ওসি ইফতেখার এর সাথে মিলে গড়ে তুলেন সীতাকুণ্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকায় নজিরবিহীন অনিয়ম দুর্নীতির সিন্ডিকেট।
সরোজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে জানা যায়, সীতাকুণ্ড মডেল থানা এলাকার (পুরাতন জাহাজ কাটা)বিভিন্ন শীপ ইয়ার্ড কোম্পানিগুলো থেকে ইফতেখার ও মোজাম্মেল গং এর বিরুদ্ধে কয়েক শত কোটি টাকার চাঁদাবাজির সত্যতা পাওয়া যায়।সীতাকুণ্ড মডেল থানা এলাকার বিভিন্ন ছোট বড় উৎপাদনশীল কল কারখানা ও শীপ ইয়াড কোম্পানিগুলোর মালিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা এই প্রতিবেদককে জানান বিগত সরকারের সময়ে পুলিশী ক্ষমতার অপব্যবহার করে ওসি ইত্তেখার ও ওসি তদন্ত মোজাম্মেল হক সীতাকুন্ড এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিন কয়েক শত কোটি টাকা।ওসি মোজাম্মেল হক সীতাকুণ্ড মডেল থানা এলাকায় ওসি তদন্ত হিসেবে থাকার সময় নজিরবিহীন অনিয়ম দুর্নীতির টাকায় প্রিয়তমা স্ত্রীর নামে রাজধানী ঢাকার আভিজাত্য এলাকা খ্যাত বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার আই ব্লকে ফাতেমা ভিলা নামে গড়ে তোলেন কয়েক কোটি টাকা মূল্যের সাততলা আলিশান ভবন।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়,পরবর্তীতে মোজাম্মেল হক কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার ওসি পদে যোগদান করেন,২০২৪ এর জুলাই আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের সময় দাউদকান্দি এলাকায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতার উপর নির্বিচারে গুলি করার ফলে ৫ই আগস্ট ২০২৪ আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ওসি মোজাম্মেল হক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার তোফের মুখে পড়ে দাউদকান্দি থানার পিছনের দরজা দিয়ে লুঙ্গি ও গেঞ্জি পরে পালিয়ে যান।অনুসন্ধানে আরো জানা যায় মহা দুর্নীতিবাজ ওসি মোজাম্মেল হক নজিরবিহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির টাকায় রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন লোকেশনে প্রিয়তমা স্ত্রী ফাতেমা ও সন্তানদের নামে বেনামে একাধিক প্লট ক্রয় করেন।এছাড়াও গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর থানার বাহাদুরপুর গ্রামে রয়েছে নামে বেনামে অঢেল সম্পত্তি এবং বিভিন্ন ব্যাংকে নামে বেনামে কোটি কোটি টাকার এফডিআর ও সঞ্চয় পত্র।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, মোজাম্মেল হক খাগড়াছড়ি প্রাইমারি স্কুল সহকারী শিক্ষিকা (বর্তমান স্ত্রী)ফাতেমার সাথে অনৈতিক সম্পর্কে থাকা অবস্থায় খাগড়াছড়ি স্থানীয় বাসিন্দাদাদের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়ার পরে খাগড়াছড়ি স্থানীয় বাসিন্দারা তার আপন বড় ভাই সাইদুল হক সাচ্চুকে খবর পাঠিয়ে খাগড়াছড়ি নিয়ে যান।পরবর্তীতে বড় ভাই সাচ্চু’র উপস্থিতিতে খাগড়াছড়ির স্থানীয় বাসিন্দারা সহকারী স্কুল শিক্ষিকা ফাতেমাকে মোজাম্মেল হক’র সাথে বিয়ে পড়িয়ে দেয়।অনুসন্ধানে আরো জানা যায় মহা দুর্নীতিবাজ সু-চতুর মোজাম্মেল হক’র চার কন্যা সন্তান।সু-চতুর মোজাম্মেল হক তার নজিরবিহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির টাকার সকল সম্পদ এবং নগদ অর্থ সবকিছু প্রিয়তম স্ত্রী ফাতেমার নামে।নিজের ব্যবহারের জন্য রয়েছে ওসি মোজাম্মেল হক’র কয়েক লক্ষ টাকা দামের গাড়ি।চাঁদপুর নৌ পুলিশে পদায়নের পর থেকে ওসি মোজাম্মেল হক অতীতের ন্যায় নৌপথে চলাচল করা ছোট-বড় নৌযান বালুবাহী ট্রলার গুলো থেকে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়মিত চাঁদাবাজি করার অভিযোগ রয়েছে।চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন ঘাটে মাছ ধরা জেলেদের সাথে কথা বলে আরও জানা যায় চাঁদপুর নৌ পুলিশ এর ওসি মোজাম্মেল হক মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে সরকার নির্ধারিত প্রজনন মৌসুম ও জাটকা ধরার বিরুদ্ধে নিষেধাজারীর সময়কালে জেলেদের মাছ ধরার সুযোগ করে দেন বলে জানান স্থানীয় জেলেরা।
চাঁদপুর নৌ পুলিশের ওসি মোজাম্মেল হকের অনিয়ম দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে জানতে চাঁদপুর নৌ পুলিশের পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিয়ে ও খুদেবার্তা পাঠানো হলেও কোন প্রকার সাড়া পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে,নজিরবিহীন অনিয়ম দুর্নীতি ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের বিষয়ে ওসি মোজাম্মেল হক এর ব্যবহৃত দুটি মুঠো ফোন নাম্বারে একবার ফোন করে ও খুদে বার্তা পাঠানো হলেও কোন প্রকার সাড়া পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে,পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মোজাম্মেল হক’র নজিরবিহীন অনিয়ম দূর্নীতি ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের বিষয়ে জানতে চাইলে,দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম প্রতিবেদককে বলেন অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চাঁদপুর নৌ পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মোজাম্মেল হক’র নজিরবিহীন অনিয়ম দুর্নীতি ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের অনুসন্ধান চলমান…………… পর্ব-১