মোঃ আসাদুজ্জামান,বরগুনাঃ
দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়া ডেঙ্গুর প্রকোপ এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে উপক‚লীয় জেলা বরগুনায়। হুহু করে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা এযেন ডেঙ্গু হটস্পট। দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। পরিস্থিতি মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। চিকিৎসক সংকট, অপর্যাপ্ত ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর সংকট পরিস্থিতিকে আরো বেশি বিপদাপন্ন করে তুলছে। সংকট মোকাবেলায় নড়েচড়ে বসেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
মঙ্গলবার (২৪ জুন)) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, অধিকাংশ ওয়ার্ডেই শয্যার সংকট দেখা দিয়েছে। বহু রোগীকে মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। নারী ও শিশু ওয়ার্ডসহ মেডিসিন ইউনিটেও একই অবস্থা। অনেক রোগীকে বারান্দা ও করিডোরে বিছানা পেতে রাখা হয়েছে। এতে করে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
বরগুনা সিভিল সার্জন অফিসের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু বরগুনা হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৮০ জন। জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে আরো ভর্তি রয়েছেন ১৩ জন। এর মধ্যে আমতলী উপজেলায় ১, বেতগী ২, বামনায় ৬ এবং পাথরঘাটায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪ জন। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২৪২ জন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১১ জুন পর্যন্ত বরগুনায় ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৪৯৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ হাজার ২৫৩ জন।এই রোগীর অধিকাংশই বরগুনা পৌর শহর ও সদর উপজেলার বাসিন্দা । এছাড়া বরগুনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এখন পর্যন্ত ৬ জন আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে বেসরকারী ভাবে বরগুনা জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা বরিশালের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু ১৬ জন। সবার বাড়ি সদর উপজেলায়।মোট সংখ্যা মৃত্যু ২২ জন ।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রেজোয়ানুর আলম বলেন, রোগীর চাপ সামাল দিতে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা উপকরণ দ্রুত সরবরাহ না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে।
বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় বরগুনায় ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ আক্রান্ত ৯৩। প্রতিদিনই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বেড়েই চলছে। এমন পরিস্থিতিতে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমাতে স্থানীয়দের সচেতন হওয়ার পাশাপাশি ব্যাপক পরিসরে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান এবং মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনার তাগিদ দেন তিনি। তিনি আরও বলেন, জরুরী পরিস্থিতি মোকাবেলায় বরগুনা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ৮জন চিকিৎসক ও ১০ জন নার্স পদায়ন করা হয়েছে। এছাড়াও স্যালাইন ও রক্ত পরীক্ষার যে কিট সংকট তৈরি হয়েছে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।