সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখো মানুষের স্রোত, কানায় কানায় পূর্ণ

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন
Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’-এর ব্যানারে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি আয়োজনের ডাক দেওয়া হয়। এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে ছোট ছোট মিছিল, মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা ও গণপরিবহনে চড়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হচ্ছেন লাখো মানুষ। এতে সৃষ্টি হয়েছে মানুষের জনস্রোত।

শনিবার (১২ এপ্রিল) বেলা ৩টায় এই গণজামায়াতে শুরু কথা থাকলেও সকাল থেকেই ফিলিস্তিনের পতাকা ও প্রতিবাদী ব্যানার হাতে এসে জনতা কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। অনেকে জায়গা না অবস্থান নিয়েছেন পেয়ে রাস্তায়।

রাজধানীর কাওরান বাজারে দেখা যায়, সকাল ১০টা থেকে ট্রাক ও পিকআপে করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দিকে যাচ্ছে হাজারো মানুষ। বহু মানুষ উদ্যানে যান মিছিল নিয়েও। এ সময় বেশিরভাগ মানুষের হাতে দেখা গেছে ফিলিস্তিনের পতাকা আর ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ লেখা কাপড়। এছাড়া তাদের স্লোগান দিতে দেখা যায়, ‘ফিলিস্তিন, জিন্দাবাদ’, ‘ইসরায়েল নিপাত যাক’। একই পরিস্থিতি বাংলামটর ও শাহাবাগ এলাকায়।

বাংলামটর এলাকায় কথা হয় মিরপুর থেকে আসা চাকরীজীবী মহিউদ্দিন মাহির সঙ্গে। তিনি বলেন, দুপুর দেড়টার দিকে গাড়ি দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান দিকে রওনা দিছি। এখন কাওরান বাজার এলাকায় গাড়ির জ্যামে পড়ে গেছে। সামনে এতো মানুষেল ভিড় আর মনে হয় না গাড়ি যেতে পারবো। এখন পায়ে হেটে উদ্যানের দিকে যেতে হবে।

শাহবাগ থেকে মিছিল নিয়ে আসা কলেজছাত্র সোহাগ খান বলেন, আমরা ছোটবেলা থেকেই গাজায় যুদ্ধ দেখে আসছি। আমরা চাই এই কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্ববাসীর চোখ খুলে যাক। গাজার শিশুদের মুখে হাসি ফেরানোর জন্য বিশ্ব নেতারা যেন কিছু করেন। গাজার মানুষের জন্য আমরা বুক পেতে দিতেও রাজি।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের টিএসসি-সংলগ্ন ফটকের সামনে ফিলিস্তিনের পতাকা বিক্রি করছিলেন নাজমুল হোসাইন। তিনি বলেন, ‘আমি এখানে শুধু পতাকা বিক্রি করতে আসিনি। এসেছি এই বার্তা দিতে- আমরা এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে। সকালে আসতেই দেখি, মানুষের ভিড়ে রাস্তা ঠাসা। এমন অন্যায় মুসলমানরা মেনে নিতে পারে না বলেই সবাই ছুটে এসেছে।’

উত্তরা থেকে বন্ধুদের নিয়ে কর্মসূচিতে এসেছেন সাইদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনে কী ভয়াবহতা চলছে, তা আমরা প্রতিদিনই দেখছি। সরাসরি কিছু করতে পারছি না, কিন্তু অন্তত পাশে দাঁড়ানোর বার্তাটুকু তো দিতে পারি। এ জন্যই এসেছি। আমাদের মতো আরও হাজারো তরুণ ইতোমধ্যে এখানে এসে গেছেন।’

সরেজমিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, উদ্যানের ঠিক পশ্চিম-পূর্ব প্রান্তের চত্বরে তৈরি করা হয়েছে খোলা মঞ্চ। এর সামনে লাল কার্পেট বিছানো হয়েছে। সেখানে শতাধিক চেয়ারের ব্যবস্থা করা হয়েছে অতিথিদের বসার জন্য। ওই মঞ্চের চারপাশ ঘিরে বাঁশ দিয়ে নিরাপত্তা বেষ্টনি তৈরি করা হয়েছে। উদ্যানের চারপাশের এলাকা এবং শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, মৎস্যভবন, দোয়েল চত্বরসহ পুরো এলাকায় মাইক লাগানো হয়েছে।

এদিকে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইতিহাস সৃষ্টি করে করে শুধু ফিলিস্তিনের জন্য এক মঞ্চে এক হচ্ছেন বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।

আয়োজকরা জানিয়েছেন, এই আয়োজনে একাত্মতা জানিয়েছেন বিভিন্ন ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও ক্রীড়াঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। ইসলামিক স্কলার ড. মিজানুর রহমান আজহারী থেকে শুরু করে ক্রীড়াবিদ, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও এই কর্মসূচির প্রতি সরব সমর্থন জানিয়েছেন।

তারা আরও জানায়, গাজার নিরস্ত্র জনগণের প্রতি সমর্থন জানানো, আন্তর্জাতিক জনমত গঠন এবং মানবিক মূল্যবোধের পক্ষে শক্ত অবস্থান নেওয়া।

অন্যদিকে, বিপুল মানুষের জমায়েত ঘিরে যেন কোনো ধরনের অনভিপ্রেত পরিস্থিতি তৈরি না হয় সেজন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও এর আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থার সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। উদ্যানের প্রতিটি প্রবেশপথে স্বেচ্ছাসেবকরা কর্মসূচি সুশৃঙ্খল রাখতে তৎপর ছিলেন সকাল থেকেই। এছাড়া এরই মধ্যে উদ্যানে স্টেজ নির্মাণ, ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন এবং জেনারেটর বসানোর হয়েছে।

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Advertisement

Contact with your
Creative & Technology Partner

Advertisement