স্বরুপকাঠীতে আতা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উপবৃত্তির অর্থ লোপাট কেরানীর

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন
Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদক :

তিন বছর ধরে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ করেছে স্কুলের কেরানী। সাধারণ এক শিক্ষার্থীর টাকা আত্মসাৎের এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে  স্বরুপকাঠী থানার জলাবাড়ি ইউনিয়নের আতা নিম্ন মাধ্যমিক স্কুলের কেরানী সুমিত মিস্ত্রির বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যায়।

সরজমিনে গিয়ে জানতে পারি, বছরের পর বছর ধরে সুমিত মিস্ত্রী অনেক ছাত্র – ছাত্রীর উপবৃত্তির টাকা প্রধান শিক্ষক প্রনব হালদারের যোগসূত্রে জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে।

ভুক্তভোগী প্রান্ত নামের এক শিক্ষার্থীর বাবা পিন্টু মিস্ত্রী জানান, আমি একজন হতদরিদ্র কৃষক। প্রতিদিন কাজ না করলে ঘরে দুইবেলা খাবার জোটে না। এমতাবস্থায়  আমার ছেলেকে আতা স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেনীতে ভর্তি করি শুধুমাত্র প্রধান শিক্ষকের উপবৃত্তির টাকা পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে। তবে কিছুদিন গেলে বিভিন্ন ধরনের অজুহাত ও তালবাহানা  করে উপবৃত্তির টাকা দেয়নি।পরবর্তীতে ছেলেকে অন্য স্কুলে ভর্তি করাতে চাইলে সুমিত মিস্ত্রী আমাকে বিভিন্ন হুমকি দেয়, বাধ্য হয়ে অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত এখানে রাখি। নবম শ্রেনীতে ভীমরুলি  ডি এন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করাই।

ওখানে উপবৃত্তি জন্য আবেদন করলে প্রধান শিক্ষক জানায়, আপনার ছেলে আগের স্কুলে উপবৃত্তি পাচ্ছে তাই এখানে পাবার সুযোগ নেই। পরে খোঁজ নিয়ে উপযুক্ত প্রমান সহিত জানতে পারি স্কুলের ক্লার্ক সুমিত মিস্ত্রী জালিয়াতি করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। পরর্বতীতে ঘটনাটি আতা স্কুলের প্রধান শিক্ষককে জানাই সে এলাকাবাসীর সামনে দায় স্বীকার করে তবে বিষয়টি নিয়ে আমাকে ব্যক্তিগতভাবে বাড়াবাড়ি না করার হুমকি দেয়।

মুঠোফোনে আমার প্রতিনিধি যোগাযোগ করলে ভীমরুলি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাবু সুদেব চন্দ্র রায় জানান বিষয়টি খুবই লজ্জার ও দু:খজনক। অস্বচ্ছল ছাত্রদের জন্য  সরকারের দেওয়া এই সামান্য  উপবৃত্তির টাকা কিভাবে একজন ক্লার্ক আত্মসাৎ করে তা অবশ্যই ঐ  স্কুলের প্রধান শিক্ষকের জানার কথা। আমি একজন শিক্ষক হিসেবে এর সঠিক তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।

আতা স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ফোন করলে সে বিষয়টি সমাধান হয়েছে বলে দাবি করে। এমন একটি জালিয়াতি আপনি কিভাবে সমাধান করলেন আর আপনি এতো দিন জানতে পারলেন না কেন? এমন প্রশ্ন কোনো  জবাব না দিয়ে ফোন কেটে দেয়।

সরেজমিনের খোজ নিয়ে এই কেরানী সুমিত মিস্ত্রির বিষয়ে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য বেড়িয়ে আসে। স্কুলের সাবেক সভাপতি গৌরাঙ্গ মিস্ত্রীর স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে ঘুষ দিয়ে তিনি নিয়োগ প্রাপ্ত হন।

সদ্য পতন হওয়া ফ্যাসিবাদ আওয়ামীলীগ সরকারের সহযোগী নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের স্বরূপকাঠি উপজেলায় সহ- সম্পাদক পদে থাকায় সুমিত মিস্ত্রী বিভিন্ন ধরনের ক্ষমতার অপব্যবহার করে আসছে। পিরোজপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ খান টিটু ও স্বরূপকাঠি উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি,  সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রনি দত্ত জয়সহ সাবেক এমপি মহিউদ্দিন মহারাজের ছত্রছায়ায় বিভিন্ন নিয়োগ বাণিজ্য, পুলিশ হয়রানি,জমি দখল ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন গুরুতর অপরাধের সাথে যুক্ত ছিল।

খবর সংগ্রহকালে সেন্টু মিস্ত্রী নামে একজন ব্যক্তি  স্কুলের সাবেক সভাপতি ও নিজেকে এক সময়ের  প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা দাবী করে সাংবাদিককে হুমকি দেয় নিউজ না করার জন্য। এলাকাবাসী জানায়, এই স্কুলের সব গুলো নিয়োগ মোটা অংকের টাকা ঘুষ নিয়ে হয়েছে। যার সাথে সরাসরি জড়িত ছিল সাবেক সভাপতিগন, বিশেষ করে গৌরাঙ্গ মিস্ত্রী, সেন্টু মিস্ত্রী, রতন রায় ও প্রধান শিক্ষক।

এলাকাবাসী আরো অভিযোগ করে, শুধু প্রান্ত নয় এছাড়াও অনেক ছাত্রের উপবৃত্তির টাকা এই জালিয়াত চক্রের মূল হোতা সুমিত মিস্ত্রী আত্মসাৎ করেছে।  ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন স্কুল এডহক ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সভাপতি সোহাগ মিস্ত্রী। তবে তিনি সদ্য নির্বাচিত হওয়া সভাপতি বলে এই বিষয়ে মন্তব্য করতে পারেননি।

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Advertisement

Contact with your
Creative & Technology Partner

Advertisement