হারুন-অর-রশিদ বাবু, রংপুর
দলমতের ভিন্নতা থাকলেও জাতির স্বার্থে ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন সদ্য কারামুক্ত রংপুরের কৃতিসন্তান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) বিকেলে বদরগঞ্জ শাহাপুর মাঠে এটিএম আজহারুল ইসলাম কারামুক্ত হয়ে বদরগঞ্জে আগমন উপলক্ষে থানা জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত শুকরানা সভা ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
এটিএম আজহার বলেন, আমি ফাঁসির রশি গলায় পড়ার জন্য সর্বদা প্রস্তুত ছিলাম, হয়তোবা বিশেষ কোন কারনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন, আমি যতদিন বেঁচে থাকবো ইসলামী আন্দোলন করেই যাব, আমি সবসময় আল্লাহর কাছে শহীদি মৃত্যু কামনা করি। তবে দীর্ঘ ১৪ বছর যে নতজানু , আজ্ঞাবাহী বিচারকরা মিথ্যা অপবাদে ফাঁসির রায় দিয়ে আমাকে বন্দী করে রেখেছিল তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করি, আমি বিশ্বাস করি বর্তমান বিচার ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ফিরে এসেছে, আপিল বিভাগের রায়ে আমি নির্দোষ ছিলাম তা প্রমাণিত হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি বর্তমান বিচার ব্যবস্থায় মানুষ ন্যায় বিচার পাবে। গত ১৭ বছর দেশের স্বাধীন কোন বিচার ব্যবস্থা ছিলনা, মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত ছিল।
তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বিশেষ করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রংপুরের ছেলে আবু সাঈদ এর আত্মদানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে, বাংলাদেশ নতুনভাবে স্বাধীন হয়েছে । আমি জালিমের কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছি। সুতরাং জুলাই অভ্যুত্থানে সকল নিহত, আহত এবং অংশগ্রহণকারীদের আমি ধন্যবাদ জানাই।
তিনি নিজ এলাকা বদরগঞ্জ বাসীর উদ্যেশ্যে বলেন, আমি বিগত কয়েক টার্ম বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ আসনে সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছিলাম, আমি কারো কোন প্রকার ক্ষতি করি নাই, আগামীতেও করবনা ইনশাআল্লাহ। আপনারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাকে যদি নির্বাচিত করেন, তাহলে একজন এমপি হিসেবে প্রাপ্ত সকল সরকারি সম্পদ আপনাদের (এলাকাবাসীর) কল্যাণে ব্যয় করব। সরকারি বরাদ্দের একটি টাকাও আমার পেটে যাবে না।
তিনি ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী হিন্দু ধর্ম সহ অন্যান্য ধর্মের ব্যপারে উদার, তিনি নিশ্চয়তা দিয়ে বলেন জামায়াতে ইসলামীর কোন নেতা-কর্মীর দ্বারা কোন হিন্দু পরিবারের ক্ষতি হয়নি হবেওনা। ইনশাআল্লাহ।
বদরগঞ্জ থানা আমীর মাওলানা কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি অধ্যাপক মেনহাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় শোকরানা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় এ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল পরিচালক মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রংপুর-দিনাজপুর সরকারি অঞ্চল পরিচালক মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, রংপুর জেলা আমীর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, রংপুর মহানগর আমীর এটিএম আযম খান।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, রংপুর জেলা সেক্রেটারি মাওলানা এনামুল হক, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন রংপুর-দিনাজপুর সহকারী অঞ্চল পরিচালক অধ্যাপক আবুল হাসেম বাদল, রংপুর মহানগর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন-এর সভাপতি অ্যাডভোকেট কাওছার আলী, জেলা শূরা সদস্য অধ্যাপক মুত্তালিব হুসাইন, আলহাজ্ব আনোয়ার হোসাইন , অধ্যাপক রায়হান সিরাজী, ইসলামী ছাত্রশিবির রংপুর মহানগর শাখার সভাপতি নুরুল হুদা সহ আরো অনেকে।